নিজেকে নয়ন বন্ডের অনুসারী দাবি করে বরগুনা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবনের ভিডিও ছড়িয়েছেন এক তরুণ। ‘শফিক বন্ড’ পরিচয় দেয়া সেই যুবক ‘আমি কারও ধার ধারিনা..’ এমন একটি গানও পরিবেশন করেছেন।
কলেজ ক্যাম্পাসে বখাটেপনার এমন দৃশ্য নিয়ে ফেসবুকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। রিফাত শরীফ হত্যার উদহরণ টেনে এখনই বখাটেদের লাগাম টানা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
ফেসবুকে একটি পেইজে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়। এতে দেখা যায়, বরগুনা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে অধ্যক্ষর কার্যালয়ের সামনে রোভার স্কাউট অফিসের পাশের সড়কে দাঁড়িয়ে গাঁজা সেবন করছিলেন শফিক। আর র্যাপের সুরে গাইছিলেন, ‘আমি বড় বেপরোয়া, কারও ধার ধারিনা...।’
গান ছাড়াও নানা অশ্রাব্য ও অশ্লীল বাক্য গানের মতো আওড়াতে থাকেন ওই তরুণ। এ সময় তার আশপাশেও কয়েকজনের কথা শোনা যায়; যারা ভিডিও নির্মাণে সহযোগিতা করছিল।
১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওটির শেষ দিকে নিজের নাম প্রকাশ করে শফিক বলেন, ‘আমি কি মামা চিনোস না, বরগুনার নয়ন বন্ড ওরফে শফিক রেজা, খাই গাঁজা।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বঘোষিত এই ‘বন্ড’ শফিক রেজার বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের কালমেঘা গ্রামে। তালতলী ফকিরহাট এলাকায় তার পৈত্রিক বাড়ি আছে। তবে পরিবার চট্টগ্রামে বসবাস করায় তার জন্ম চট্টগ্রাম শহরে।
চট্টগ্রামের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর সঙ্গদোষে মাদকাসক্ত হয় শফিক। বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নে তার নানার বাড়ি।
শফিকের নানি বলেন, ‘চট্টগ্রামে বড় হয়েছে শফিক। ভাল ছাত্র ছিল। কিন্তু মাদকে আসক্ত হয়ে তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কখনো চট্টগ্রাম, কখনো তালতলী আবার মাঝে মাঝে এখানেও আসে।’
বরগুনা সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নয়ন বন্ড যুগের অবসানের পর কলেজে বখাটেদের আড্ডা কমে আসছিল। করোনার পর কলেজ খুললে আবার বখাটেদের উৎপাত শুরু হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি নিয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। থানায় সাধারণ ডাইরি করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি যাতে বহিরাগতরা আর কলেজে প্রবেশ করতে না পারে।’
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানিনা। খোঁজ নিচ্ছি।’