আগামী দশকের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির চাহিদা বিবেচনায় কর্মকৌশল নির্ধারণ করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই)। এ জন্য ১০ বছর মেয়াদি একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ চলছে।
রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শনিবার এ তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও রপ্তানি খাতে চাহিদা তৈরি হবে নতুন পণ্যের। অর্থনীতির আকারও বড় হবে। সরকারের নেয়া নানা অবকাঠামো প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ হলে বিদেশি বিনিয়োগও বাড়বে। তখন পণ্য পরিবহন, বন্দরের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।
‘সবকিছুকে বিবেচনায় রেখে এফবিসিসিআই আগামী দশকের অর্থনীতির চাহিদার উপযোগী কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে ১০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এলডিসি-পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা মোকাবিলায় খাতভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে একটি ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে এফবিসিসিআই। আগামী মাসেই এ-সংক্রান্ত ধারণাপত্রটি সরকারের কাছে জমা দেয়া হবে।’
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে কাজ করছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়- এমন তথ্য দিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চলমান এ কার্যক্রম শেষ হলে দেশের বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকৃত পণ্যের উৎপাদন করা হবে।’
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফরের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশি প্রবাসীদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্ম দেশ দুটির মূল অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। কিন্তু তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে ওই সব প্রবাসী উদ্যোক্তাকে যুক্ত করতে পারলে দেশ দুটির মূল বাজার ধরা সহজ হবে।’
এ লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মূল ধারার বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথাও জানান তিনি।
এ ছাড়া তৈরি পোশাকের বাইরে নতুন নতুন সম্ভাবনাময় পণ্যের তালিকা, সেগুলো রপ্তানির সুযোগ ও প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে গবেষণা করতে এইচএসবিসির সঙ্গেও সমঝোতা স্মারক সই করেছে এফবিসিসিআই।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, এসব কার্যক্রমের ফলে এলডিসি-পরবর্তী সময়ের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চাকা বেগবান হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এফিবিসিসিআইয়ের আয়োজনে ‘বিজয়ের ৫০ বছর: লাল সবুজের মহোৎসব’ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ উৎসব।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও লাখো শহীদের প্রতি ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতাবোধের প্রকাশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মহোৎসব করছে এফবিসিসিআই।’ তিনি সবাইকে এ মহোৎসবে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিনুল হক শামীম, মো. আমিন হেলালী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, এম.এ রাজ্জাক খান রাজসহ বর্তমান কমিটির পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।