বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘শিক্ষক রাজনীতির স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করবেন না’

  •    
  • ৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:১১

রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষক রাজনীতি যেটা আছে, সেটা অনেক সময় খুবই পীড়াদায়ক মনে হয়। এটা আপনারা নিজেরাই ভাববেন। তবে আমার অনুরোধ, ছাত্রদের কোনো দিনই শিক্ষক রাজনীতির স্বার্থে কাজে লাগাবেন না।’

শিক্ষক রাজনীতির স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার না করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষক রাজনীতি যেটা আছে, সেটা অনেক সময় খুবই পীড়াদায়ক মনে হয়। এটা আপনারা নিজেরাই ভাববেন। তবে আমার অনুরোধ, ছাত্রদের কোনো দিনই শিক্ষক রাজনীতির স্বার্থে কাজে লাগাবেন না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার চতুর্থ দিন শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রামেন্দু মজুমদার এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো শাহাদত আলী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আজ গোটা বাংলাদেশরই দুর্ভাগ্য যে মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং পরমতসহিষ্ণুতা আমাদের এখান থেকে উঠে গেছে। আমরা একেবারেই কারও কথা সহ্য করতে পারি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো আর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সংস্কৃতি চর্চা থেকে আমরা দূরে চলে যাচ্ছি বলেই এই সংকটগুলো আসছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম খুবই জরুরি।’

সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি নিয়মিত ডাকসু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানান রামেন্দু।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর সুযোগ এসেছে। অতীত নিয়ে আমরা অবশ্যই গৌরব করব। তবে দৃষ্টিটা ভবিষ্যতের দিকে রাখতে হবে। আগামী ১০০ বছরে কী করে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও বেশি অর্থবহ করে তুলতে পারি, সেটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’

রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক অপ্রয়োজনীয় বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট আছে। এগুলো একটু দেখা উচিত। বর্তমান সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখেই যেন আমরা নতুন নতুন বিভাগ খুলি। উপাচার্য মহোদয় নিঃসন্দেহে সেটি খেয়াল রাখবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার মধ্যে থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের আলাদা একটি ইনস্টিটিউট আছে। সেখানে গবেষণার জন্য বৃত্তি দেয়া হয়। কিন্তু গবেষণা করার লোক পাওয়া কঠিন। সহজে মানুষ আসতে চান না। এটা একটা বিপজ্জনক ব্যাপার। আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকি বা শিক্ষকতাই করতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাকে গবেষণার মধ্যে থাকা প্রয়োজন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এবং নৃত্যকলা বিভাগ নিয়ে আলাদা একটা অনুষদ করার আহ্বানও জানান রামেন্দু মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘এই অনুষদের নাম হতে পারে ফ্যাকাল্টি অফ ফাইন অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস। তাহলেই এই বিশেষায়িত শিক্ষার প্রতি আরও গুরুত্ব দেয়া যাবে।’

আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষাসহ বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন হয়েছে, সব অর্জনের মূল চালিকাশক্তি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ই আলোকবর্তিকা হয়ে জাতিকে সব সময় পথ দেখিয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি রয়েছে। যেসব তরুণ দেশের জন্য অবদান রাখছে, তাদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।’

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়েছে। যেখানেই রাষ্ট্র সংকটে পড়েছে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেনি। দেশের গণতন্ত্রকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক এবং প্রতিটা ছাত্র সংগঠনের একটা বিশাল অবদান আছে। যেটা ইতিহাস লেখা আছে। এটাকে ম্লান করা যাবে না।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘অতীতের দিকে তাকিয়ে, বর্তমানকে বিশ্লেষণ করে এবং ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে যে মুক্তবুদ্ধির চর্চা সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহত রাখবে বলে আমি আশাবাদী।’

অগ্নিকন্যাখ্যাত সাবেক এই নেত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট। আকাশ ছোঁবে তোমরা; আকাশ ছুঁতে হবে তোমাদের। সেই পরিবেশ একদিকে সরকার যেমন রচনা করবে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে তোমরাও এটি করবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম রেজার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।

এ বিভাগের আরো খবর