ওয়াসার পানিকে ‘শতভাগ সুপেয়’ বলা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
সংস্থাটির পানি এখনও শতভাগ সুপেয় হয়নি জানিয়ে তা ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবির ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, নিম্নমানের কারণে ঢাকা মহানগরীতে ওয়াসার ৯১ শতাংশ সেবাগ্রহীতা পানি ফুটিয়ে পান করেন।
২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, পানি ফোটানোর কারণে ঢাকা মহানগরীতে গ্রাহকরা যে পরিমাণ জ্বালানি খরচ করেছেন, তার অর্থমূল্য প্রায় ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬২০ টাকা।
টিআইবির এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান সে সময় বলেছিলেন, ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়।
ওই বক্তব্যের আড়াই বছর পর ঢাকা ওয়াসার কর্মকাণ্ড নিয়ে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এমডি।
এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, ব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল) উত্তম কুমার, সচিব প্রকৌশলী শারমিন হক, এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার।
ঢাকা ওয়াসার কনফারেন্স সেন্টারের এ মতবিনিময় সভায় তাকসিম এ খান বলেন, রাজধানীর ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ জায়গায় ওয়াসার পানি বিশুদ্ধ। সেটি পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘…সমস্যা হচ্ছে পাইপ লাইনে, পাইপ লাইনে যদি না ভাঙা থাকে তাহলে পানি ফোটানোর প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া সমস্যা আপনাদের পানি রিজার্ভের স্থানে। পানি রিজার্ভ করে রাখা স্থান পরিষ্কার রাখলে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পানি না ফুটিয়ে পান করতে পারে।’
পানি ফুটিয়ে পানের পরামর্শ দিয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘আমি জানি না কোন এলাকা বা স্থান এবং সময়ে ১০ শতাংশ খারাপ পানির অবস্থায় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ, পানি ফুটিয়ে খান।’
ওয়াসা শতভাগ পানি ফোটানোর ব্যবস্থা করলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তাকসিম।
তিনি বলেন, ‘৫ থেকে ১০ শতাংশ আপনারা পান করার জন্য ফুটিয়ে ব্যবহার করেন। বাকি অন্য পানি ফুটিয়ে ছাড়া এমনিতেই ব্যবহার করছেন। ওয়াসা যদি ১০০ শতাংশ পানি ফুটিয়ে দেয়, তাহলে পানির দাম ৯ গুণ বাড়বে।’
আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ওয়াসার এমডি বলেন, ‘পানি ফুটিয়ে খাওয়া আপনার চয়েজ। কারণ আমরা ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দিতে পারব না।
‘পানি যেখানে রিজার্ভ করা হয়, রিজাভ স্থানগুলো থেকেও পানিতে জীবাণু ছড়ায়। ট্যাংকগুলো তিন মাস পরপর পরিষ্কার করতে হবে।’
শীতে পানি সংকট দেখা দিলেও সমস্যা হবে না জানিয়ে তাকসিম বলেন, ‘প্রতি বছর শীতে কিছু না কিছু স্থানে পানির সংকট দেখা দেয়, তবে এবার আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছি।
‘৯০০ ডিপ টিউবওয়েল নতুন করে বসানো হয়ছে। এটা এখন বন্ধ থাকে। শীতে পানি সংকট দেখা দিলে এই টিউবওয়েল ব্যবহার করা হবে।’