কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমানের ধাক্কায় দুটি গরুর মৃত্যুর পর বরিশাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, রানওয়ের পাশে ঘাস খাচ্ছে গরু। সীমানা প্রাচীর ভেঙে বিমানবন্দরের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা করেছে স্থানীয় লোকজন।
বাবুগঞ্জের রহমতপুর এলাকার রিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানে উঁকি দিলেই গরু চরতে দেখা যায়। এর মধ্যে কোথায় যেন দেখলাম গরুর জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমাদের বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকের উদাসীনতার জন্যই এমন অবস্থা।’
শফিকুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, ‘প্রতিদিন এত মানুষ বিমানে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াত করে। আর এই বিমানবন্দরের প্রাচীর ভেঙে স্থানীয়রা যাতায়াত করছেন, গরু চরাচ্ছেন আর কর্তৃপক্ষ সম্ভবত বড় কোনো দুর্ঘটনার অপেক্ষায় গরুর জন্য ঘাস কাটছে।’
১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে বরিশাল নগর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে এই বিমানবন্দরের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছিল ২ হাজার ৩০০ ফুট। পরে দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৬ হাজার ফুট করা হয়।
বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে দেশের সবচেয়ে ছোট রানওয়ে। প্রতিদিন ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের বিমান এখানে যাত্রী আনা-নেয়া করে।
বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, এভাবে অরক্ষিত থাকায় যেকোনো সময় একটু অসতর্কতায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এসব বিষয়ে বারবার ব্যবস্থাপককে জানালেও তিনি কোনো কথা শোনেন না।
বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থাপক আব্দুর রহিম তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আপনারা সিভিল এভিয়েশনের জনসংযোগ বিভাগে কথা বলেন।’
বরিশাল বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীর ভেঙে যাতায়াতের রাস্তা করেছে স্থানীয়রা
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভিল এভিয়েশনের প্রকৌশল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন নীতিমালা অনুযায়ী রানওয়েতে কোনোভাবে গরু, ছাগল ঢুকতে পারবে না। তবে এই বিমানবন্দরে প্রায়ই গরু দেখা যায়। আবার দেয়াল ভেঙে দেয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ঢাকায় আলোচনা করেছি।’
গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ওড়ার সময় রানওয়েতে ঢুকে পড়ে দুটি গরু। সেগুলোকে ধাক্কা দিয়েই যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়ে বিজি ৪৩৪ ফ্লাইটটি।
উড়োজাহাজ ও আরোহীরা নিরাপদে থাকলেও মারা যায় বিমানের সঙ্গে ধাক্কা লাগা দুটি গরু।
বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিমানবন্দরে সব সময় নিরাপত্তা দিতে হয়। ভেঙে ফেলা দেয়াল দ্রুত আটকে দেয়া দরকার। পাশাপাশি গরু যেন চরতে না পারে, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।’