ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য (মেম্বার) নির্বাচিত হয়ে গরিবের ভাতা থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন এক জনপ্রতিনিধি; যিনি আসন্ন নির্বাচনেও অংশ নিতে যাচ্ছেন।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার জাহির বক্সের এই ‘স্বীকারোক্তির’ একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে তার এলাকায় নির্বাচনি জনসভায় ওই বক্তব্য দেন তিনি। ভিডিওটি নিউজবাংলার হাতে রয়েছে।
ভিডিওতে জাহির বক্সকে বলতে দেখা যায়, ‘আমার সম্পর্কে যা রটেছে তা সত্য। আমি চায়ের দোকনদার ছিলাম। গরিব মানুষ আমাকে আপনারা মেম্বার বানিয়েছেন। আমার নিজের চলার জন্য; আপনারা যারা ভাতা পান তাদেরকে বলে বলে হাজার ১৫শ’ বা কারো থেকে ২ হাজার টাকা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি সুন্দর করেই সবাইকে বলেছি, তুমিতো সারাজীবন পাবে, কিন্তু আমি গরিব মানুষ চলব কিভাবে? আপনারা আমাকে দিয়েছেন।’এই প্রার্থী ওই জনসভায় আরও বলেন, ‘আরেকটা কথা বলা হয় আমাকে নিয়ে। টিউবয়েল দিলে আমাকে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দেয়া লাগে। কথা কিন্তু ১০০% সত্য। আমি কারো থেকে চুরি করে নেইনি, বলে নিয়েছি। আমার আব্বা বলেছেন, মানুষের ক্ষতি করবিনা, হারাম কাজ করবিনা, কারো থেকে টাকা নিলে বলে নিবি।’
ভিডিওতে জাহির বক্সকে আরও বলতে শোনা যায়, ’মানুষ আমার কাছে এসে বলে- ভোট দিলাম কিছু পাইনাই। মানুষের সেবা না করতে পেরে আমার হার্টে সমস্যা হয়েছে। আমি হাসপাতালে ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রজেক্টের যে কাজ হয়েছে তা হওয়ার পর সরকারি কর্মকর্তারা এসে দেখে যান। এরপরেও কিছু টাকা থাকে। এই যে টাকা থাকে, তা মেম্বারে খায়। আমিও মেম্বার হিসেবে খেয়েছি। তবে এখন আমি স্বচ্ছল আছি। তাই আমি অতীতে যা ভুল করেছি তার জন্য মাফ চাই। যদি আবার আমাকে ভোট দেন, আমি আর এক টাকাও খাব না। ‘
এ দিকে তার এই বক্তব্য নিয়ে এলাকায় সচেতন ভোটারদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউ কেউ আবার প্রশংসাও করেছেন। স্থানীয় একজন আইনজীবী বলেন, উনি অপরাধ করেছেন সেটা সত্য। আবার সব কিছু বলে ক্ষমা চেয়েছেন। এটা কিন্তু ভাল দিক।
এ প্রসঙ্গে জাহির বক্স বলেন, ’যা বলার বলে ফেলছি। মানুষ আমাকে আবার ভোট দেবে। সরাসরি চা খেয়ে কথা বলব। এখন একটু ব্যস্ত।’
আগামী ২৬ ডিসেম্বর দেশে অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন। এতে অংশগ্রহণ করছেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার জাহির বক্স।