ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আবারও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাক্ষাৎকার দিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভর্তি করিয়ে দিতে ৩ লাখ টাকার চুক্তি করার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
আটকের পর রায়ান আমিন আফ্রিদি নামে ওই ছাত্র অভিযোগ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে জাবি কর্তৃপক্ষ।
আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকে (সম্মান) ভর্তির জন্য পরীক্ষা দেন। ‘এফ’ ইউনিটের আইন অনুষদে সাক্ষাৎকার দিতে আসলে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আমিনের মূল পরীক্ষার কপির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময়ের হাতের লেখায় মিল ছিল না। আইন অনুষদের ডিন বিষয়টি জানালে তাকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ চলে।
সুদীপ্ত বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে আমিন বলেন, ‘আমার ফেসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনেট নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে জাবিতে এসে তার সঙ্গে দেখা করি। এ সময় তিনি আমার মূল কাগজপত্র নিয়ে যায়। তিনি আমার হয়ে পরীক্ষায় বসে। আমার সিরিয়াল ৫২ আসে। তার সঙ্গে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে জাবিতে চান্স পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয়।’”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালর পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। পাশাপাশি আমরা জালিয়াতি চক্রের বাকি সদস্যদের ধরার চেষ্টা করছি।’
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদে সাক্ষাৎকার দিতে আসা আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করে কর্তৃপক্ষ।
মোস্তফা কামাল উৎস নামে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধেও ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে।
সুদীপ্ত শাহীন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে কামাল জানিয়েছেন, তার দুই বন্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মাধ্যমে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামীম নামে দুজনের খোঁজ পান।
৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের সঙ্গে জাবিতে চান্স পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয় তার। পরে তার প্রবেশপত্র নিয়ে আরেকজন জাবির গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষায় তার মেধাক্রম আসে ৩০০। পরে চুক্তি অনুযায়ী পুরো টাকা শোধ করেন তিনি।
তাকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।