বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কংস নদের ভাঙনের মুখে শত শত বসতঘর

  •    
  • ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৩:০৩

খোকন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘ভাঙনের কারণে কেউ কেউ তিন-চারবার পর্যন্ত জায়গা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আবার যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই- তারা এখনও ভাঙনের মুখেই ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে আছেন।’

নেত্রকোণার সদর ও বারহাট্টা উপজেলায় কংস নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দুই উপজেলার পাঁচ গ্রামের অন্তত এক হাজার ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে পাঁচ শতাধিক বসতভিটা। এ ছাড়া বিলীন হচ্ছে সড়ক, গ্রামীণ রাস্তা, কবরস্থান এবং কৃষিজমি। ভাঙন ঠেকাতে টেকসই কোনো পদক্ষেপ দেখছে না এলাকাবাসী। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙন ঠেকাতে তারা প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

জেলা সদর ও বারহাট্টা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে কংস নদ। বর্ষায় এ নদ দিয়ে উজান থেকে নেমে আসে পাহাড়ি ঢল। তখন পাড়ে শুরু হয় ভাঙন। আবার পানি নেমে গেলে দেখা দেয় আরেক দফা ভাঙন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার কর্ণপুর, বাড়ি-তাতিয়র ও সদর উপজেলার চরপাড়া, পাঁচপাই এবং বাঘরুয়া গ্রামে তীব্র ভাঙন চলছে। গেল এক দশকে গ্রামগুলোর পাঁচ শতাধিক বসতভিটা এবং ফসলিজমি বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া হুমকির মুখে আছে প্রায় এক হাজার বাড়িঘর।

ভাঙতে ভাঙতে অনেকের বসতভিটার খুব কাছে চলে এসেছে নদটি। আবার কারও কারও বাড়ির কিছু অংশ কেবল টিকে আছে।

জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াতে জন্য নির্মিত ফকিরের বাজার-ঠাকুরাকোনা সড়কটিও ভেঙে যাচ্ছে। গত চার বছরে সড়কটির চরপাড়া এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশ বিলীন হয়ে গেছে।

কর্ণপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘কংস নদের ভাঙন চলছে প্রায় দুইযুগ ধরে। তবে গত কয়েক বছরে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। গত ১০ বছরে পাঁচটি গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর এবং ফকিরের বাজার নামে পরিচিতি স্থানীয় বাজারটির অন্তত শতাধিক দোকানপাট বিলীন হয়েছে।

‘এ ছাড়াও বিলীন হয়েছে অনেক জমি-জমা, কবরস্থান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এতে সহায়-সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে বহু পরিবার। কিছু পরিবার এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’

একই গ্রামের আব্দুল মন্নাফ বলেন, ‘ভাঙনে সবকিছু হারালেও আমাদের পুনর্বাসনের খোঁজ নেয়নি কেউ। ভিটেমাটি হারিয়ে আমাদের অনেকে এখন বাস্তুহারা।’

খোকন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘ভাঙনের কারণে কেউ কেউ তিন-চারবার পর্যন্ত জায়গা ছেড়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আবার যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই- তারা এখনও ভাঙনের মুখেই ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে আছেন।’

একই এলাকার রাসেল আরাফাত বলেন, ‘স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ছাড়া কংস নদের ভাঙন রোধ করা সম্ভব না। বাঁধের জন্য আমরা বহুবার পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এসে বিভিন্ন সময়ে ঘুরে গেছেন। তখন তারা বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের। কিন্তু পরে আর কোনো উদ্যোগ দেখিনি।’

গতবছর পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এলাকাটি পরিদর্শন করে গেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। তারাও তখন ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, ‘সদর এবং বারহাট্টায় কংস নদের ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই প্রস্তাবটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর