চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
একই সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগও উঠেছে চেয়ারম্যান সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হোসাইনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
নাজমুল হোসাইন আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি তৃতীয় ধাপে ডাউকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল শাওন ও মামুন।
আহত নাজমুলকে উদ্ধারের সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত সদ্য বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামের সমার্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় কেউ আহত হননি।
এদিকে নাজমুলকে মারধরের প্রতিবাদে রাত ৯টার দিকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এ সময় তরিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি ও গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়।
ওই বিক্ষাভ সমাবেশের সময় চেয়ারম্যান তরিকুলের লোকজন পাল্টা বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় তরিকুল সমর্থকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং পুলিশের দুটিসহ তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওই চার সদস্য আহত হয়েছেন। পরে তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যায়, নাজমুল সমর্থকদের বিক্ষোভ মিছিল করার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তরিকুল ইসলামের সমর্থকরাও শহরে পাল্টা বিক্ষোভের প্রস্তুতি নেয়। এ জন্য হাউসপুর এলাকায় তারা অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ বিক্ষোভ মিছিল করতে বাধা দিলে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার শুরু যেখানে
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে ডাউকি গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল সমর্থক সাজেদুর রহমান রকির বোনকে একই গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থক হাসান উত্ত্যক্ত করে। বিষয়টি জানার পর রকি হাসানকে চড়-থাপ্পড় মারে।
এ ঘটনা জানাজানির পর চেয়ারম্যান সমর্থক আওয়ামী লীগ কর্মীরা নাজমুল হোসেনের ওপর হামলা করেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম রিফাত জানান, নৌকা প্রতীকে বিজয়ী চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামসহ তার কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও জিআই পাইপ দিয়ে নাজমুল হোসাইনকে বেধড়ক মারধর করেছেন।
তিনি আরও জানান, ওই ঘটনার পর আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখানে তরিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় সমাবেশে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ওই ঘটনায় এক পরিদর্শকসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’