বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিবির-জামায়াত বিএনপি করে তিনি এখন নৌকার মাঝি

  •    
  • ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৯:০৯

নৌকার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলাল মাস্টারও জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে আমি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। বিএনপিকেও সমর্থন করতাম। এখন আমি আওয়ামী লীগ করি। আমি এবার নৌকার মাঝি। এই ইউনিয়নে নৌকাই জিতবে, এটা আমার বিশ্বাস।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আলাউদ্দিন আলাল ছিলেন শিবিরকর্মী। ১০ বছর আগেও সামলিয়েছেন ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্ব। ছিলেন বিএনপিতেও।

সেই আলালই আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার এক বছরের মাথায় ২০১৬ সালে ১৭ নম্বর জগন্নাথপুর ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীকে হন চেয়ারম্যান। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান বিরোধী দুই দলে থাকা এই নেতা এবারও ইউপি নির্বাচনে পেয়েছেন নৌকা।

আলালের বিষয় নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দেশে চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে সেই আলালকেই ফের মনোনয়ন দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেবেশ চন্দ্র শর্মা জানান, আলাল মাস্টার একসময় সক্রিয় শিবিরকর্মী ছিলেন। ২০০৯ ও ২০১১ সালে তিনি ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্বে ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ২০১২ সালের ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে ভোটকেন্দ্রে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগও করেন।

তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে হঠাৎ তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়ে যান এবং নির্বাচিত হন। এর পর আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে আলোচনা শুরু হলে ২০১৯ সালে প্রকাশিত রংপুর বিভাগের ৩৮৯ জন অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় তার নাম উল্লেখ করা হয়।’

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায় বলেন, ‘আলাল মাস্টার এমন লোক, যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের হয়ে কাজ করে। তার ছোট ভাই জেনারুল ইউনিয়ন বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক।

‘উনি এই মেয়াদে (চেয়ারম্যান) আওয়ামী লীগ কর্মীদের সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখে বিরোধীদের নিয়ে কাজ করেছেন। আবার উনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগ এই ইউনিয়নটি হারাতে পারে।’

ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল রানা বলেন, ‘ইউনিয়নের যত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন, সব পেয়েছে বিএনপি-জামায়াতের লোক। তিনি শিবিরকর্মী ছিলেন তারপরও কেন তাকে দুবার নৌকার মনোনয়ন দেয়া হলো? এতে আমাদের যে আওয়ামী লীগ কর্মীরা আছেন, তাদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।’

জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম জানান, আলাল মাস্টার ছাত্রজীবন থেকে শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তাকে জগন্নাথপুর ইউনিয়নে সেক্রেটারির দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

তিনি বলেন, ‘যত দূর খবর পাচ্ছি, যারা বিএনপি-জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করছেন, তারাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পাচ্ছেন। সে জন্য হয়তো তিনি দল বদল করেছেন।’

নৌকার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলাল মাস্টারও জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে আমি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। বিএনপিকেও সমর্থন করতাম। এখন আমি আওয়ামী লীগ করি। আমি এবার নৌকার মাঝি। এই ইউনিয়নে নৌকাই জিতবে, এটা আমার বিশ্বাস। আর যারা আমার নামে অভিযোগ দেয়, তারা আমার ভালো চায় না।’

ঠাকুরগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অরুণাংশু দত্ত টিটো বলেন, ‘আলাল মাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমি জানি। যারা নৌকা প্রতীক চেয়ে পাননি তারাই এসব অভিযোগ নিয়ে ঘুরছেন।

তিনি এর আগেও নৌকার প্রতীকে নির্বাচন করে জয় পেয়েছেন। হয়তো সেই কারণেই কেন্দ্র থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এটা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত, আমার কিছু করার নাই।

এ বিভাগের আরো খবর