রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের জরুরি অবতরণ করা ফ্লাইটটির কোথাও কোনো বোমা পাওয়া যায়নি।
বুধবার রাত দেড়টায় বিমানবন্দরে জরুরি ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম তৌহিদুল আহসান।
তিনি বলেন, ‘বোমা থাকার সত্যতা পাওয়া না গেলেও এমন তথ্যকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা উড়োজাহাজটি একটি নিরাপদ জায়গায় রেখে তল্লাশি চালাই। যাত্রী, এয়ারক্র্যাফট ও লাগেজের কোথাও বোমার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
ব্রিফিংয়ের শুরুতে বিমানবন্দরের পরিচালক তৌহিদুল আহসান বলেন, ‘তথ্য পাওয়ার পর আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মিটিং করি। যদিও যে নিউজটা পেয়েছিলাম, সেটির সত্যতা মিটিংয়েও পাওয়া যায়নি। যেহেতু তথ্য পেয়েছি বিমানে বোমা থাকার আশঙ্কা আছে, সে জন্য আমরা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইস্যুটিকে আমরা হালকাভাবে নেইনি।’
বুধবার রাত দেড়টায় বিমানবন্দরে জরুরি ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম তৌহিদুল আহসান। ছবি: নিউজবাংলা
‘আমরা সব অপারেশন করার জন্য প্রস্তুত হই। আমরা তখন ঘোষণা দেই যে আমরা অ্যাকশনে যাব, আমরা সব তল্লাশি করব। নিয়ম অনুসারে সে সময় সব প্রয়োজনীয় কাজ করার জন্য প্রস্তুত হই। তখন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে খবর দেয়া হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই বোমা নিষ্ক্রিয় টিমসহ অন্যান্য টিম হাজির হয়। এ্রয়ারক্রাফট যখন ল্যান্ড করে, তখন অন্যান্য সংস্থ্যা র্যাব, এপিবিএন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্সসহ গোয়েন্দা সংস্থাদের খবর দেয়া হয়।'
তিনি আরও বলেন, ‘তারপর ব্যাপক তল্লাশি চলে। যেভাবে তল্লাশি করার কথা, সেভাবেই হয়। প্রথমে আমরা যাত্রীদের অফলোড করি, এরপর তাদের নিরাপত্তা তল্লাশি করি। কার্গো অফলোড করা হয়। আমরা তল্লাশি করার সময় ডেনজারাস কিছু পাইনি।
‘এটা করতে একটু সময় লাগে। যাত্রীদের একে একে বের করে তাদের নিখুঁতভাবে তল্লাশি করা হয়। এরপর লাগেজ কম্পাটমেন্ট দুটি রয়েছে, একটি সামনে আর একটি পেছনে। আমরা পেছনের কম্পাটমেন্ট থেকে লাগেজ নামিয়ে সেগুলোকে আস্তে আস্তে ট্রলিতে করে নামিয়ে বে’তে পাঠিয়ে দেই। এরপর সামনের কম্পাটমেন্ট থেকেও লাগেজ নামিয়ে স্ক্যান করি। রাত ১টার দিকে কাজ শেষ করি। তার আগে আমরা কেবিন স্ক্যান করি, সেখানেও কিছু পাওয়া যায়নি। বম্ব ডিসপোজাল টিমের কমান্ডার ছিলেন বিমান বাহিনীর। তিনি ঘোষণা দেন এখানে কোনো বোমার সন্ধান পাওয়া যায়নি, এয়ারক্র্যাফট নিরাপদ।’
বোমা আতঙ্ক নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে বুধবার রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে।
১৩৫ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকায় জরুরি অবতরণ করার আগেই সংবাদ মেলে যাত্রীর লাগেজে বোমা থাকার। তারই সূত্রে ফ্লাইটটিতে তল্লাশি চালানো হয়।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, জরুরি অবতরণের পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফ্লাইটটি থেকে যাত্রী নামাতে সব এয়ারলাইনসের বাসগুলো বিমানের পাশে নেয়া হয়। সব যাত্রীকে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নিয়ে শুরু হয় তল্লাশি।
রাত সোয়া ১১টায় সেনাবাহিনীর একটি টিম বিমানবন্দরের ভেতরে ঢোকে। নিরাপত্তা তল্লাশিসহ সার্বিক কাজে সহায়তা করছে সেনা টিম।
একই রাতে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি থাকায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট।
বুধবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ৪২ যাত্রী নিয়ে সেই বিমানটি অবতরণ করে বলে নিউজবাংলাকে জানান বিমানবন্দরের বিমান বাংলাদেশের সহকারী ম্যানেজার ওমর ফারুক।