বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে লাল-সবুজের মহোৎসবে ছিল এক ঝাঁক তারকার মিলনমেলা।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন আয়োজিত ওই মহোৎসবে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর হাতিরঝিলে মহোৎসবের প্রথম দিনে দেশের গান ও নৃত্যে মেতে ওঠেন শিল্পীরা। রাতে আলোক উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রথম দিন শেষ হয়।
লাল-সবুজের মহোৎসবে সংগীত পরিবেশন করে দেশবরেণ্য কণ্ঠ শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। দেশের গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করেন অভিনেতা ফেরদৌস, অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিম, তমা মির্জা, ইমন, নিরব, মেহজাবিনরা।
বিজয়ের মাসে রাজধানীর হাতিরঝিলে ১৬ দিনব্যাপী লাল-সবুজের মহোৎসবের প্রথম দিনে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
গানে গানে ছন্দে-আনন্দে সাফল্যগাথা তুলে ধরতে পরিবেশন করা হয় 'এগিয়ে চলো আবার জয় বাংলা বলে' গান। এর সংগীত আয়োজন করেন কৌশিক হোসেন তাপস, কণ্ঠও তার।
এরপর মঞ্চে আসেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। 'দে তালি, বাঙালি, আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখার দিন' গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন তিনি ও তার সহশিল্পীরা।
পিয়ানোর তালে, মঙ্গল প্রদীপের আলোয় রেজওয়ানা চৌধুরী গেয়ে শোনান ‘আনন্দলোকে’। তার সঙ্গে কণ্ঠ মেলান সহশিল্পীরা। এ সময় পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর নৃত্য।
অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী আজাদ আবুল কালামের কণ্ঠে উঠে আসে ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগ থেকে স্বাধীন বাংলার ইতিহাস। মঞ্চের এলইডি পর্দায় দেখানো হয় ইতিহাস থেকে নেয়া বিভিন্ন ছবি।
ইতিহাস বর্ণনা যখন এসে ঠেকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে, তখন শুরু হয় পরের পরিবেশনা। 'জয় বাংলা বাংলার জয়' গানের পরিবেশনায় অংশ নেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
এর পরেই হয় সমবেত সংগীত। 'নোঙ্গর তোলো তোলো' গানটি কণ্ঠে তোলেন রফিকুল আলম, শাহীন সামাদসহ অগ্রজ-অনুজ কণ্ঠশিল্পীরা। তারা আরও গেয়ে শোনান 'কারার ওই লৌহ কপাট', 'চল চল চল', 'মাগো ভাবনা কেন' গানগুলো।
আবার শুরু হয় ইতিহাস পাঠ। বর্ণনা ১৪ ডিসেম্বরে এসে দাঁড়ালে শুরু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের পরিবেশনা। নতুন সংগীতায়োজনে তারা গেয়ে শোনান 'রক্তলাল'।
এরপর স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধুর দেশে ফেরা এবং সেই নির্মম ১৫ আগস্ট সবই উঠে আসে ইতিহাসের বর্ণনায়।
শেখ হাসিনার দেশে ফেরা, নতুন করে হাল ধরা- এসব যখন পর্দায় দেখানো হচ্ছে তখন বেজে ওঠে ‘ও আলোর পথযাত্রী’ গানটি। সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন অভিনেত্রী পূর্ণিমা ও তার সহশিল্পীরা।
'ও পৃথিবী এবার এসে বাংলাদেশ নাও চিনে'- শেখ হাসিনার নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রকাশ করতে মঞ্চে আসেন তমা মির্জা, ইমন। ‘লাল-সবুজের বিজয় নিশান’ হাতে হাতে ছড়িয়ে দিতে আসেন নিরব, মেহজাবিন।
আরও হয় নৃত্যশিল্পীদের বিশেষ পরিবেশনা। সংগীতশিল্পীরা একদম শেষে সমবেত কণ্ঠে গেয়ে শোনান 'সকল দেশের রানী সেজে আমার জন্মভূমি', 'শোনো একটি মুজিবুরের', 'জয় বাংলা বাংলার জয়' গানগুলো।
'আমরা করব জয়' গান দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর সবশেষে বিজয়ের আনন্দে ছোড়া হয় আতশবাজি।
মহোৎসবের শেষে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় হাতিরঝিল এলাকায় এ উৎসব হয়। সে সময় বাজি ফুটিয়ে বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন করা হয়। সে সময় রাজধানীর আকাশ আতশবাজিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কয়েক মিনিট ধরে চলে এ আতশবাজির বিচ্ছুরণ।