বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘শি’-কে ভয়, তাই এলো ‘ওমিক্রন’!

  •    
  • ৩০ নভেম্বর, ২০২১ ২০:২৮

গ্রিক বর্ণমালার ক্রমানুসারে ১২টি অক্ষরের নামে করোনার ১২টি ভ্যারিয়েন্টের নামকরণের পর হঠাৎ করেই দুটি অক্ষর বাদ দিয়ে পঞ্চদশ অক্ষর ‘ওমিক্রন’ বেছে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর এতেই তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

কোভিড ১৯ এর জন্য দায়ী করোনাভাইরাসের সবশেষ ধরন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে উদ্বেগ এখন সারা বিশ্বে।

আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণের দেশ বতসোয়ানায় প্রথম শনাক্ত হওয়া এই ভ্যারিয়েন্টের শুরুতে নাম ছিল ‘বি.১.১.৫২৯’, তবে শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেয় ‘ওমিক্রন’।

ভাইরাসটির গতি-প্রকৃতি এবং এটি কতটুকু ক্ষতির কারণ হতে পারে- তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নতুন ধরনটির নাম নিয়েও চলছে হৈ চৈ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসটি শনাক্ত হওয়ার প্রথম দিকে এটি ‘২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। মানবদেহে সংক্রমিত যে কোনো নতুন করোনাভাইরাসের বৈজ্ঞানিক নামকরণের আগে ‘নভেল (নতুন) করোনাভাইরাস’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির নাম দেয় সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম করোনাভাইরাস টু (সার্স-কভ-২)। এর পর একের পর এক ভাইরাসটির নতুন ধরন তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলোর নতুন বৈজ্ঞানিক নামও দিতে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

তবে এসব নাম বেশ জটিল হওয়ায় ভাইরাসের পরবর্তী ধরনগুলো এদের পরিচিতি পেতে থাকে প্রথম শনাক্ত হওয়া দেশের নামে। যেমন বি.১.৬১৭.২ ভ্যারিয়েন্টটি ভারতীয় ধরন হিসেবে সংবাদ মাধ্যমে পরিচিত পায়। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের জন্য বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের সহজ নামকরণের উদ্যোগ নেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই নামকরণে একটি পদ্ধতিও ঠিক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক্ষেত্রে গ্রিক বর্ণমালার অক্ষরগুলো দিয়ে শুরু হয় নামকরণ।

২৪ অক্ষরের গ্রিক বর্ণমালার প্রথম অক্ষর ‘আলফা’। সে অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া একাধিক মিউটেশনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া করোনার ‘বি.১.১.৭’ ধরনটির নাম দেয়া হয় ‘আলফা’। এরপরে ২০২০ সালেই সাউথ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া আরেকটি উচ্চ মিউটেশনের ধরনের (বি.১.৩৫১) নামকরণ হয় গ্রিক বর্ণমালার দ্বিতীয় অক্ষর ‘বেটা’ নামে।

ব্রাজিলে প্রথমবার শনাক্ত হওয়া আরেকটি ধরনের (পি.১) নাম রাখা হয় ‘গামা’। এটি গ্রিক বর্ণমালার তৃতীয় অক্ষর। চতুর্থ অক্ষর ‘ডেল্টা’ নামকরণ করা হয় ভারতে শনাক্ত হওয়া ধরনটির (বি.১.৬১৭.২)।

এভাবে ধারাবাহিকভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে শনাক্ত হওয়া ধরনগুলোর নাম রাখা হয়েছে- এপসাইলন, জেটা, এটা, থেটা, আইওটা, কাপা, ল্যাম্বডা, মিউ। এগুলোর মধ্যে ল্যাম্বডা ছাড়া বাকিগুলোর সংক্রমণ ক্ষমতা কম হওয়ায় খুব বেশি আলোচনায় আসেনি।

এভাবে গ্রিক বর্ণমালার ক্রমানুসারে ১২টি অক্ষরের নামে করোনার ১২টি ভ্যারিয়েন্টের নামকরণের পর হঠাৎ করেই দুটি অক্ষর বাদ দিয়ে পঞ্চদশ অক্ষর ‘ওমিক্রন’ বেছে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর এতেই তৈরি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

ওমিক্রনের আগে পাশ কাটিয়ে যাওয়া গ্রিক অক্ষর দুটি হলো- নু এবং শি।

অনেকের অভিযোগ, চীনা প্রেসিডেন্ট চিনপিং-এর পারিবারিক উপাধি শি হওয়ার কারণেই এই অক্ষরটিকে এড়িয়ে গেছে সংস্থাটি।

এক বিবৃতিতে বিষয়টি স্বীকারও করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের বক্তব্য হলো, ‘শি’ শব্দটি পারিবারিক উপাধি হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করেন, তাই এটি বাদ দেয়া হয়েছে। আর ‘নু’ এর উচ্চারণ ইংরেজি শব্দ ‘নিউ’ এর সঙ্গে মিলে যায় বলে, বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য অক্ষরটি বাদ দেয়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, যে কোনো নতুন রোগের নাম নির্ধারণে তারা খুবই সতর্ক থাকেন, যাতে এই নাম কোনো সংস্কৃতি, সমাজ, জাতি, অঞ্চল বা গোষ্ঠীর জন্য বিব্রতকর না হয়।

তবে ‘শি’ এড়িয়ে যাওয়ার পেছনে রাজনীতি রয়েছে বলে তীর্যক মন্তব্য ছুড়ছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর এক টুইটে লিখেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের কম্যুনিস্ট পার্টিকে এতটাই ভয় পেলে তারা পরে কীভাবে বিশ্বাস করবে যে, দেশটি একটি মহামারিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।’

আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে ট্রাম্প জুনিয়র টুইটে লিখেছেন, ‘আমি যতদূর জানি, শি ভ্যারিয়েন্টই হলো করোনার আসল ভ্যারিয়েন্ট।’

প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেণী নামে এক ভারতীয় রাজনীতিক লিখেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের নাম নিতে ভয় পায়। কিন্তু তারা ভারত আর সাউথ আফ্রিকাকে দোষারোপ করতে এক পা সবসময় বাড়িয়ে রাখে।’

এ বিভাগের আরো খবর