যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া আদালত প্রাঙ্গণেও বেপরোয়া আচরণ দেখালেন। মামলার আসামি হিসাবে আদালতে হাজিরা দিতে এসে ঝালমুড়ি আর চানাচুরে মত্ততা দেখালেন এই আলোচিত নারী। বেশ আয়েশ করে পানি পান করতেও দেখা যায় তাকে।
কম যাননি পাপিয়ার শুভাকাঙ্ক্ষী এক ব্যক্তিও। মুড়ি-চানাচুর আর পানির সুবিধা দিতে এক নারী পুলিশ সদস্যকে টিপস দিতে দেখা গেছে তাকে। এজলাস কক্ষের ছবি তোলা নিষিদ্ধ থাকায় ওই ঘটনা ক্যামেরায় ধারণ করা যায়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে হাজিরা দিতে আনা হয় শামিমা নুর পাপিয়াকে। তিনি আইনজীবীদের বসার জন্য এজলাস কক্ষে স্থাপন করা সোফায় বসা থাকেন। এক পর্যায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো সহযোগী অন্য আসামিদের সঙ্গে তাকে নিচু স্বরে দফায় দফায় শলাপরামর্শ করতেও দেখা যায়। আদালতে তার এমন ব্যতিক্রমী আচরণ উপস্থিত অন্য অনেকেরই নজর কাড়ে।
একই আদালতে রমজান আলী নামে আরেক মামলার এক আসামির হাজিরা ছিল। পাপিয়ার এমন আচরণ দেখে তিনি অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এরা যেখানেই যাক শান্তিতেই থাকে। আদালতের এজলাস কক্ষে এসেও যাচ্ছেতাই আচরণ করছে। আর আমরা মিথ্যা মামলার ঘাণি টানছি।’
অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গত বছরের ১০ অক্টোবর শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ ওই রায় শোনার সময়ও তাদের মধ্যে কোনো ভাবান্তর দেখা যায়নি।
আলোচিত এই দম্পতির বিরুদ্ধে আরো চারটি মামলা বিচারাধীন। তার মধ্যে অস্ত্র আইনের এই মামলায় সবার আগে তাকে ওই সাজা শোনানো হয়।
অস্ত্র আইনের ১৯ এর ‘এ’ ধারায় অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে পাপিয়া ও সুমনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর ১৯ এর ‘এফ’ ধারায় অবৈধভাবে গুলি রাখার দায়ে দেয়া হয়েছে সাত বছরের কারাদণ্ড। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে এই দম্পতিকে মোট ২০ বছরের সাজাই খাটতে হবে।
এই দম্পতির বিরুদ্ধে আরো পাঁচটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলা তদন্তাধীন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের তিনটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশনের এক মামলায় আজ অভিযোগ গঠন করা হয়। জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দন্ডবিধিতে পৃথক দুটি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। আরেকটি মাদক আইনের মামলায়ও সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
একটি মামলায় সাজাসহ মোট ছয়টি মামলার আসামি এই দম্পতি কারাগারের ভেতরেও দোর্দণ্ড প্রতাপে ছড়ি ঘোরান বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট আদালতে অন্য মামলায় হাজিরা দিতে আসা আসামিরা।