অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বিজিবি সদস্য রুবেল মণ্ডলকে হত্যা করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন পরাজিত জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মারুফ হোসেন অন্তিক।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নির্বাচনি সহিংসতায় বিজিবি সদস্যের হত্যার ঘটনায় করা মামলায় এই অভিযোগ এনেছেন বাদী।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং অফিসার, পুলিশ, আনসার ও বিজিবি সদস্যদের হত্যাচেষ্টা করেন।
কিশোরগঞ্জ থানায় সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে মামলাটি করা হয়। গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ললিত চন্দ্র রায় মামলাটি করেন।
মামলায় মারুফ হোসেন অন্তিককে প্রধান করে ৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে এরই মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন পশ্চিম দলিরাম গ্রামের আনোয়ার হোসেন, ইসমাইল হোসেন, যাদু মিয়া, মজনু মিয়া, শরিফুল ইসলাম, ফরহাদ হোসেন, মো. নিশাদ ও মো. নিরব।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২৮ নভেম্বর ভোট শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারপিট করে পরাজিত প্রার্থী অন্তিকের সমর্থকরা।
এ সময় ব্যালট বাক্স, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতার ৫৬ হাজার ৬৫০ টাকা চুরি করে পালানোর চেষ্টা হলে পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।
এ সময় নির্বাচনি যানবাহন, ভাড়া করা গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং স্কুলঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়। এরই মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হয় বিজিবির টিম। তখন মারুফ হোসেন অন্তিকের নেতৃত্বে হত্যা করা হয় বিজিবি সদস্য রুবেল মণ্ডলকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪৬ রাউন্ড এবং বিজিবি ১৩৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
অভিযোগের বিষয়ে জানাতে বাদী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ললিত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টিম মঙ্গলবার দুপুরে সার্কিট হাউসে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে টিমে ছিলেন বিজিবি রংপুর রিজিওনাল কমান্ডার মাহবুবার রহমান খান, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক ওয়ালিদ হোসেন এবং নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা মুরাদ হাসান বেগ।
টিমের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়ালসহ আরও কয়েকজন।
জেলা জজ আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মোমিনুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার আটজনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিকেলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল নিউজবাংলাকে জানান, জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হবে।