দেশের সব মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনতে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিসের’ মতোই এবার ‘নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস’ চালু করতে যাচ্ছে সরকার।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার দেশে ওমিক্রন ঠেকাতে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরই মধ্যে ১০ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়ে গেছে। এরমধ্যে সিঙ্গেল ডোজ প্রায় ৬ কোটির মতো আর ডাবল ডোজও প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি হয়ে গেছে। সব পর্যায়ের মানুষকে টিকা দেয়ার জন্য আমরা একেবারে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত টিকা পৌঁছে দিচ্ছি।
‘এরপরেও দেখা যায় অনেকেই এখনও টিকা নেন নাই। টিকা দেয়ায় আগে যে আগ্রহ পেয়েছি সেটা এখন কম। একটা জিনিস আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেটা সকলেই একমত হয়েছেন, সেটা হলো নো মাস্ক, নো সার্ভিস ছিল। এখন আমরা বলতে চাচ্ছি নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস। এ কথাটা আমরা বলতে চাচ্ছি। এটা আমাদের পরামর্শ থাকলো। এটা করতে পারলে টিকা কার্যক্রমটা আরও বেগবান হবে এবং টিকা নেয়ার জন্য মানুষ হয়তো আরও বেশি আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস যেটা বললাম, এটা এখানেই তৈরি হলো। আমরা চিঠির মাধ্যমে সব মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেবো। তারা যে যার মতো করে এনফোর্স করবে। প্রাইভেট লেভেলে আমরা ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেবো।’
সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের করোনা প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন বয়স্করা। তাই ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের জন্য টিকার বুস্টার ডোজ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয় আমরা চিন্তা করেছি, যারা ষাটোর্ধ্ব অথবা যারা অসুস্থ, তাদের বুস্টার ডোজের আওতায় আমরা নিয়ে আসতে চাই। এ বিষয়ে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। শিগগিরই যাতে তাদের বুস্টার ডোজ দিতে পারি। অনেক দেশেই এটা দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা মোটামুটি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রতিনিয়তই দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২৭৩ জনের শরীরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ২৮৪ জনের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৯৮১ জনের।
গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৬৮ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৯৬৫ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহ নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সে দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে ধরা হয়।
সে অনুযায়ী বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সরকারের লক্ষ্য এই হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা।