‘মাইনুদ্দীন কই, আমার মাইনুদ্দীন। ওরে ফোন দে কেউ। আমার মাইনুদ্দী কইছে- আমারে ভালো কলেজে ভর্তি করে দিবা আব্বা। বুট খাওয়ার কথা বইলা ১০ টাকার নিয়া বাইর হইছিল আমার পোলায়।’
পূর্ব রামপুরা তিতাস রোডের বাসায় মাইনুদ্দীনের বাসার সামনে এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়ে কথাগুলো বলছিলেন মাইনুদ্দীনের বাবা আব্দুর রহমান ভান্ডারি। পাশেই কাঁদছিলেন মাইনুদ্দীনের মা।
কেঁদে কেঁদে মাইনুদ্দীনের বাবা বলেই যাচ্ছিলেন, ‘আমারে কইছে- আব্বা ১০টা টাকা দাও, বুট খাইতে যাবো। এই বইলা বের হইছে। এর ১০-১৫ মিনিট পরে লোকজন আমারে কইতাছে, তাড়াতাড়ি বাইর হন। মাইনুলের অবস্থা ভালো না। আমার পুতে আমার চায়ের দোকানে সাহায্য করে। সুপারি কাইটা দেয়, অন্য কামও করে। দুই ছেলে এক মেয়ে আমার। মাইনুদ্দীন সবার ছোট। মেয়েটা বোবা।’
বিলাপ করে তিনি আরও বলেন, ‘সব ছাত্রের কাছে আমার বিচার। আমি গরীব মানুষ। আমি তো কিছু করতে পারমু না।’
‘আমার পোলা তো দেরি করে না। কেউ ফোন দে আমার পুতেরে। আমার পুতেরে ফোন দিলেই চইলা আইবো’- এমন আহাজারিতে আশপাশের মানুষেরও চোখ ভিজে যাচ্ছিল। সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তারা।
নিহত মাইনুদ্দীন
রাজধানীর রামপুরায় বাসের ধাক্কায় নিহত মাইনুদ্দীন একরামুন্নেসা স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় বাবার ব্যবসায় সহযোগিতা করছিলেন। স্বপ্ন ছিল, উচ্চ শিক্ষিত হয়ে বড় চাকরি করার। কিন্তু সোমবার রাতে ঘাতক বাস প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তার।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরা বাজারে সোনালী ব্যাংকের সামনের রাস্তায় ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় মানুষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে তারা বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দেয় এবং ভাঙচুর করে।
বাবার এই চায়ের দোকান থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন মানুদ্দীন