কুমিল্লায় কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ হত্যায় অংশ নেয়াদের আরেকটি ভিডিও হাতে পেয়েছে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ২৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌড়াচ্ছেন ১ নম্বর আসামি শাহ আলম ও অজ্ঞাত এক যুবক।
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব জানান।
তিনি বলেন, ‘এজাহারে নাম না থাকলেও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে নিশ্চিত হয়েছি, শাহ আলমের সঙ্গে থাকা যুবকের নাম নাজিম। তার বাড়ি কুমিল্লায়। তিনিও ওই হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। এজাহারে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।’
সোহান সরকার আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছি হিট স্কোয়াডে ৬ জন ছিলেন। তারা হলেন ১ নম্বর আসামি শাহ আলম, ২ নম্বর আসামি সোহেল, ৩ নম্বর আসামি সাব্বির হোসেন, ৫ নম্বর আসামি সাজেন। বাকি দুজন নতুন সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত হওয়া নাজিম ও ফেনী থেকে আসা অজ্ঞাত এক আসামি। আসামি সাজেনের বাসায় হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল।’
সুজানগরে নিজ কার্যালয়ে গত ২২ নভেম্বর বিকেলে কাউন্সিলর সোহেলসহ গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ৬ জন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেল ও তার সঙ্গী হরিপদ সাহার মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল।এ ঘটনায় হওয়া মামলায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলমকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ১০-১২ জনকে।
মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মো. মাসুম, মো. সুমন, আশিকুর রহমান রকি, আলম মিয়া ও জিসান মিয়া। এজাহারের বাইরের মোহাম্মদ রাব্বি ইসলাম অন্তু নামের একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে আলোচিত এই হত্যায় অংশ নেয়া দুজনের গুলি করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সুজানগরের পাথুরিয়াপাড়ায় থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজ নামে কাউন্সিলরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাকে গুলির ভিডিও পাওয়া না গেলেও প্রতিষ্ঠানটির সামনের একটি রাস্তায় অস্ত্রধারীদের গতিবিধি ধরা পড়ে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরায়।
২ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, সোহেলের কার্যালয় থেকে পশ্চিম দিকে সুজানগর থেকে পাথুরিয়াপাড়া সড়কে দুই যুবক প্রকাশ্যে গুলি চালাচ্ছেন। এ সময় আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায়ও কাউকে চলাচল করতে দেখা যায়নি।
ফুটেজে আরও দেখা যায়, গুলি করতে থাকা যুবকদের মুখে মুখোশ। তারা বিভিন্ন ছাদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি করছে। ওই সময় ওপর থেকে তাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তারা আরও উত্তেজিত হয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পশ্চিম দিকে গিয়ে ফের পূর্ব দিকে কাউন্সিলরের কার্যালয়ের দিকে চলে যায়।
এর কিছুক্ষণ পরই স্থানীয়রা বাড়িঘর থেকে বের হয়ে দৌড়ে পূর্ব দিকে কাউন্সিলরের কার্যালয়ের দিকে যান। ভিডিও ফুটেজে এক যুবকের হাতে দুটি এবং আরেক যুবকের হাতে একটি পিস্তল দেখা যায়।
ওই ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম বলেন, ‘ফুটেজটি ২২ নভেম্বরের। এটি বিশ্লেষণ করছি। দ্রুত ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হবে।’