ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান এস এম দীন ইসলাম কারাগারে দুই বছর। টানা দুইবারের চেয়ারম্যান হওয়ায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পেয়ে জেলে থেকেই স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশ নেন দীন ইসলাম। তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে এস এম বায়েজিদ। রাজনীতিতে কোনো দক্ষতা না থাকলে বাবার হয়ে নির্বাচনে লড়েছেন তিনি।
উঠান বৈঠক, পথসভা থেকে শুরু করে নির্বাচনি প্রচারে জনগণের মন কেড়েছেন। অবশেষে ২৮ নভেম্বর খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউপি নির্বাচনে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে বাবাকে বিজয়ী করেছেন ছেলে।
নির্বাচনের পরদিন সোমবার কোদলা গ্রামে চেয়ারম্যান এস এম দীন ইসলামের বাড়িতে যখন উৎসবমুখর পরিবেশ। তখন বাবার শূন্যতায় আবেগাপ্লুত ছেলে বায়েজিদ।
নিউজবাংলাকে দেয়া সাক্ষাতকারে বায়েজিদ বলেন, ‘আমার বাবা ৮ বছর ধরে ছাগলাদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। দুইবারের চেয়ারম্যানও তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে এলাকায় একটি হত্যার ঘটনায় মামলা হয়। এজাহারে প্রথমে বাবার নাম না থাকলেও পরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয় বাবাকে।
‘আদালত থেকে কয়েকবার জামিন পেলেও জেলগেট থেকে তা বাতিল হয়ে যায়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারণে কোনোভাবেই বাবাকে জামিনে মুক্ত করা যায়নি।’
বাবা জেলে থাকায় তার পক্ষে প্রচার চালান বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করছি। রাজনীতির কোনো বিষয় তেমন জানা নেই আমার। বাবা জেলে থাকার কারণে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাননি৷ কিন্তু এলাকার জনগণ বাবাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে জোরাল দাবি করেন।সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি বাবার হয়ে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেই। মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে যাই।
‘পথসভা, উঠান বৈঠক সবকিছুতেই অংশ নেই। এলাকার মানুষের ভালোবাসা আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে। তবে প্রচারের সময় প্রতিপক্ষের অনেক বাধার মুখেও পড়েছি। কিন্তু আমরা কোনো প্রকার ঝামেলায় না গিয়ে শুধু মানুষের কাছে থাকার চেষ্টা করেছি। রোববারের নির্বাচনে জনগণ আমাদের পুরস্কৃত করেছেন। জেলে থেকেও বাবা বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এই বিজয় এলাকাবাসীর।’
বায়েজিদ বলেন, ‘বাড়িতে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই আনন্দঘন মুহুর্তে বাবা জেলে।’