সিটি করপোরেশনের সড়ক প্রশস্ত করতে যারা জমি দিয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ।
তিনি বলেন, ‘সড়ক প্রশস্তকরণে যারা জমি হারিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। এই কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে নগরীকে ঢেলে সাজাতে চাই।’
গাজীপুর নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে রোববার দুপুরে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যানজট এড়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে বনমালা রেললাইনের পাশে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৫০ ফুট প্রশস্ত সড়ক। গত জুন মাসে চালু হওয়া এই সড়ক দিয়ে টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর যেতে সময় লাগছে মাত্র ২০ মিনিট। এই সড়ক নির্মাণের সময় ১৭টি পরিবারের জমি অধিগ্রহণ করে সিটি করপোরেশন। তবে ভূমি অধিগ্রহণের কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।
ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত মঙ্গলবার বনমালা সড়কে বাঁশের খুঁটি গেড়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
বনমালা এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘আমার ৩ কাঠা জমি অধিগ্রহণ করেছে সিটি করপোরেশন। এ সময় তারা জমির কাগজপত্রও নেয়। জমির মূল্য ৯০ লাখ টাকা হলেও মেয়র দিয়েছেন মাত্র ১ লাখ টাকা।’
দায়ত্বি নেয়ার পর সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিরণ
কিরণ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের বিধান অনুযায়ী নির্বাচনের প্রথম সভার এক মাসের মধ্যে প্যানেল মেয়র নির্বাচন করতে হয়। তবে অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, আমরা তিন বছর চেষ্টা করেও প্যানেল মেয়র গঠনে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি (জাহাঙ্গীর) ক্ষমতা কুক্ষিগত করে অন্যায়ভাবে নগরভবনকে কাজে লাগিয়েছেন।’
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে সম্প্রতি জাহাঙ্গীর আলমকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার জায়গায় নতুন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আতাউল্লাহ মণ্ডল।
এরপর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আসাদুর রহমান কিরণের নাম ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, ইজারার অর্থ নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানা অভিযোগ আছে। এ ছাড়া ভূমি দখল ও ক্ষতিপূরণ না দিয়ে, রাস্তা প্রশস্ত করার অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জবাব দেননি বরখাস্ত মেয়র।’
নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘গত মেয়াদে ২৭ মাস ১৩ দিন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। আমি জানি কীভাবে নগরের উন্নয়ন করতে হবে। আমি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সব কাউন্সিলর ও নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় গাজীপুর নগরীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে চাই।’