গাজীপুরের টঙ্গীর হাজির মাজার বস্তিতে আগুনে সর্বস্বান্তদের একজন ছুড়িয়া বেগম। শনিবার ভোর ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে লাগা আগুনে পুড়ে যাওয়া পাঁচ শতাধিক ঘরের একটিতে থাকতেন দুই সন্তান নিয়ে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৫০ বছরের ছুড়িয়ার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তখন ধ্বংসস্তূপে কী যেন খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন... করছেন বিলাপ।
ছুড়িয়া বলেন, ‘আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আসবাব, টাকা-পয়সা। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারিনি।’
আরেক ক্ষতিগ্রস্ত জাকির হোসেন বলেন, ‘আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোটা বস্তিতে। কোনো রকমে ঘর থেকে বেরিয়ে জীবন বাঁচিয়েছি।’
ধ্বংসস্তূপের সামনে বসে কাঁদছিলেন জরিনা বেগম। দুই সন্তানের একজন পোশাক কারখানায় কাজ করেন, অন্যজন বেকার। আগুনে তার তিনটি ঘর পুড়ে গেছে।
জরিনা বলেন, ‘ঘরে ৬০ হাজার টাকা ছিল। আসবাবপত্রের সঙ্গে পুড়ে গেছে সেই সঞ্চয়। এখন কী হবে জানি না।’
জরিনা যখন তার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বলছিলেন, তখন একটু দূরে আহাজারি করছিলেন দেলোয়ারা নামের আরেক নারী। চিৎকার করে বলছিলেন, আমার তো আর কিছুই রইল না। কী নিয়া বাঁচমু? আগুন তুই সব নিলি, আমারে নিলি না ক্যান।
ক্ষতিগ্রস্তদের আপাতত বস্তির পাশের একটি স্কুলে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ৫৭ নম্বর ওয়ার্ল্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার।
তিনি বলেন, ‘আগামী সাত দিন তিন বেলা করে তাদের খাবার সরবরাহ করব। এ ছাড়া তালিকা করে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হবে।’
ফায়ার সার্ভিসের ৯ ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, ‘মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছি। প্রায় প্রতি ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’