করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে এবং বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শিথিল করার যে পরিকল্পনা রয়েছে, সেগুলোকে পুনরায় পর্যালোচনা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ।
তিনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের নতুন উদ্বেগজনক ধরন ‘ওমিক্রন’-এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতকে অতি সক্রিয় হতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা যাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করা কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সফল মোকাবিলা করতে পারি।’
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিকল্পনাগুলো আবার পর্যালোচনার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে দেশগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার দেশের করোনা পরিস্থিতি এবং টিকা অভিযান পর্যালোচনা করতে শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন।
ওই বৈঠকেই করোনা মহামারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারির ওষুধ, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর এবং টিকাসংক্রান্ত বিষয়গুলোর প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী এদিন আবার বলেছেন যে পরীক্ষা, ট্র্যাকিং এবং চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই।
করোনাভাইরাসের একটি নতুন স্ট্রেইন যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে এবং উদ্বেগজনক ও অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ভাইরাস হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠক ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় কেবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পি কে মিশ্র, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ এবং নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডা. ভি কে পল উপস্থিত ছিলেন।
এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা, হংকং, বতসোয়ানা, ইসরায়েল এবং বেলজিয়ামে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের সন্ধান পাওয়া গেছে। এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে মহামারি মোকাবিলায় রাজ্যগুলোর সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড রোগীদের জন্য হাসপাতালের শয্যার প্রাপ্যতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ওষুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভারতের ওষুধ শিল্পের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তিনি রেমডেসিভির ও অন্যান্য ওষুধের প্রাপ্যতা ও সরবরাহের অবস্থা পর্যালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে রেমডেসিভির প্রাপ্যতার সমস্যা মোকাবিলায় নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানো হয়।
কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, উচ্চ হারে করোনা আক্রান্ত ১২টি রাজ্যে অবিচ্ছিন্নভাবে মেডিক্যাল অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া অক্সিজেনের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।