পদ্মা ব্যাংক অনেক প্রতিকূল অবস্থা পার করলেও থেমে থাকেনি। ব্যাংকের খেলপি ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে আমানত। পরিচালনা পর্ষদের দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে সামনে পদ্মা ব্যাংকে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।
নদীর নামে এ ব্যাংকের নাম। পদ্মা নদীর মতো এ ব্যাংকও সর্বদা বহমান।
রাজধানীর শ্যুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে শনিবার পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকা উত্তর জোনের গ্রাহক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এহসান খসরু। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আহসান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ‘পদ্মা প্রয়োজন’, ‘পদ্মা হোম লোন’, ‘পদ্মা অটো লোন’, পারসোনাল লোন, অটোমেটেড চালান সিস্টেম উদ্বোধন করা হয়।
ব্যাংকের এমডি এহসান খসরু বলেন, “আমরা ২০১৮ সালে শুরু করার সময় গ্রাহকদের কাছে চার মাস সময় চেয়েছিলাম। যে অবস্থান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, তিন বছরে তা অপেক্ষা সব আর্থিক সূচকে উন্নতি লাভ করেছে। বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে আর্থিক ভিত্তি উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
“একটা আনসেফ পরিস্থিতি থেকে সেফ ব্যাংক করার চেষ্টা করেছি। এখানে ৬৮ শতাংশ সরকারি শেয়ার। নদীর নামে এই ব্যাংকের নামকরণ করা হয়। ‘পদ্মা’ নাম আমাদের গতি, জাগরণ।”
গ্রাহক সমাবেশে বক্তব্য দেন পদ্মা ব্যাংকের এমডি এহসান খসরু। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা
গ্রাহক সমাবেশ সফল করার জন্য তিনি গ্রাহকদের ধন্যবাদ জনান। এই সময় তিনি ব্যাংকের বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স, আমানত ও রিকভারিতে সফলতার পাশাপাশি পদ্মা প্রয়োজন, গাড়ি, বাড়ির ঋণ সেবা ও পদ্মা ওয়ালেট, পদ্মা আই ব্যাংকিংসহ ব্যাংকের বিভিন্ন আধুনিক প্রোডাক্ট গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরেন।
আগামীতে আরও আকর্ষণীয় সব পণ্য গ্রাহকদের সেবায় নিয়ে আসার ঘোষণাও দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘খুব ক্রান্তিলগ্নে আমি এই ব্যাংকের দায়িত্ব নিই। ব্যাড লোন রিকভারি আর নতুন আমানতে আমি জোর দিয়েছি। ২০১৮ সালে পদ্মা ব্যাংকের ৮০ শতাংশ ঋণ ছিল অনাদায়ি। তিন বছরে সেটা কমে ৬০ শতাংশে নেমেছে। সামনে এটা কারও কমে আসবে।’
এমডি বলেন, ‘আমাদের ব্যাংক কমপ্লিট ডিজিটাল হবে। এখন গ্রাহকরা ঘরে বসে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে হিসাব খুলতে পারছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঘরে থেকে তাদের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে।
‘এ ছাড়া মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় লেনদেন করতে পারছে। এমনকি ঘরে বসেও ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট করার সুবিধা বাস্তবায়ন করেছি আই ব্যাংকিং ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।’
গ্রাহকরা পদ্মা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড দিয়ে দেশের যেকোনো ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে বিনা মূল্যে টাকা উত্তোলন সুবিধাকে স্বাগত জানান। ব্যাংকটির আধুনিক নানা ধরনের পণ্যেরও প্রশংসা করেন তারা।
গ্রাহকরা বলেন, পদ্মা ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে প্রতিদিন আকর্ষণীয় মুনাফা পাওয়া যায়। এটা অন্য কোনো ব্যাংকে নেই। আমানতের বিপরীতে ৮০ শতাংশ ঋণ সুবিধারও প্রশংসা করেন তারা।
‘পদ্মা প্রয়োজন’ ঋণের স্কিমে রয়েছে প্রতি হাজারে ৯০ টাকা মাসিক কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা। এ ঋণ ১২ কিস্তিতে পরিশোধের সুয়োগ রয়েছে। নিয়মিত ঋণ শোধ করে পরবর্তী বছর বর্ধিত হারে ঋণ নেয়ার সুযোগও আছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পদ্মা ব্যাংকের চিফ অপারেটিং অফিসার জাবেদ আমিন, সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নারী উদ্যোক্তা রুপা বুটিকসের সত্বাধিকারী রুপা আহমেদসহ অনেকে।
সমাবেশে পদ্মা ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান এম আহসান উল্লা খান, এসইভিপি হেড অফ আরএএমডি অ্যান্ড ল’ ফিরোজ আলম, হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং এ এসএমই, এগ্রি অ্যান্ড উই ডিভিশনের কর্মকর্তা খন্দকার জীবানুর রহমানসহ ব্যাংকের অন্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ব্যাংক ও আইসিবির মূল মালিকানায় পরিচালিত পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড দেশজুড়ে ৫৮টি শাখার মাধ্যমে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।