বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরিয়ে ফেলতে বর্তমান সরকার ওয়ান ইলেভেন থেকে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শনিবার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন দিবসের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার দীর্ঘ কাল থেকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে খালেদাকে সরিয়ে ফেলার জন্য, একদলীয় শাসনব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছে। আজকে নয়, এটা শুরু হয়েছে ১/১১ থেকে। তারই পরিণতি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া আজকে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।'
১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
খালেদার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবার ও দল থেকে সরকারের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মিলছে না। বিএনপি থেকে বলা হয়েছে, তাদের নেত্রীর অবস্থা ‘ভ্যারি ক্রিটিক্যাল’।
বিদেশ নিয়ে খালেদাকে চিকিৎসা করানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেন বেগম জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য বলছি। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার টেকনোলজি বাংলাদেশে নেই, যেটা দিয়ে খালেদা জিয়ার রোগের সঠিক দিকটা ধরতে পারে। তাই ডাক্তাররা বলছেন, তাকে একটি অ্যাডভান্স সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা ভুলে যায়। ১/১১ তে শেখ হাসিনা যখন গ্রেপ্তার হলেন, তখন বেগম খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়েছিলেন তার মুক্তির জন্য। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করা এমন এক নেত্রী। আজকে তাকে আপনারা মৃত্যুর দিকে ঠেকে দিচ্ছেন। কেন দিচ্ছেন আমরা সবাই বুঝি। আপনি ভাবছেন তাকে সরিয়ে দিলে আপনার সামনে বড় কাঁটা সরে যাবে।’
গণতন্ত্র আর বেগম খালেদা জিয়াকে আলাদা করা যাবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তার চিকিৎসা তার বেঁচে থাকা এই জাতির কাছে অত্যন্ত জরুরি। আজকে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদ এক নয়।
‘এই ফ্যাসিবাদ আমাদের গণতন্ত্রের সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই আজকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, দেশকে রক্ষা করার জন্যে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর জন্য আসুন ঐক্যবদ্ধ হই।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবীর খোকন, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ নব্বইয়ের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।