লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও তার সমর্থকরা গুলি করে হত্যাসহ নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা বলেছেন, এসব মিথ্যা।
ভোটের প্রচার নিয়ে বিরোধে প্রায়ই ঘটেছে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংর্ঘষ। ভাঙচুর করা হচ্ছে নির্বাচনী অফিস। এসব বিষয়ে একে অপরকে দায়ী করছেন।
রোববার রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে ভোট হবে। পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর পৌর নির্বাচনেও ভোটাররা তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। শহরের ১৫টি ওয়ার্ডে ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে।
রামগঞ্জ উপজেলার লামচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়েজ উল্যাহ জিসান পাটওয়ারী অভিযোগ করেছেন, নৌকার প্রার্থী মাহেনারা পারভীন ও তার সমর্থকরা তাদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
তবে নৌকার প্রার্থী মাহেনারা পারভীন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এলাকায় ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।
একই অভিযোগ করেছেন, চন্ডিপুর ইউপির আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী,শামছুল ইসলাম সুমন, রায়পুরে দক্ষিণ চরবংশীর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুর রশিদ মোল্লা,বামনী ইউপির মঞ্জুরুল কবির ও কেরোয়ার মো. ইউনুছসহ ১৭টি ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী।
রায়পুর উপজেলায় উত্তর চরবংশীতে আবুল হোসেন, রায়পুর ইউনিয়নে সফিউল আজম চৌধুরী সুমন ও চরমোহনাতে সফিকুর রহমান পাঠান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান এবং দুই উপজেলায় সংরক্ষিত মহিলা ও পুরুষ পদে ১৬ জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
১৭ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা ও পুরুষ সদস্য পদে ৯৮৫ জন নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় ৪ জন মেয়র ও ১০০ জন সংরক্ষিত মহিলা ও পুরুষ কাউলিন্সর প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নাজমুল করিম রাজুর অভিযোগ, তার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী নাসির উদ্দিন লিটন ও গোলাম মোস্তফা এবং তার সমর্থকরা প্রকাশ্যে তাকে ও পরিবারের সবাইকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন ভালো চাইলে ভোটের আগে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অপর দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নাসির উদ্দিন লিটন ও গোলাম মোস্তফা বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এ ধরনের কথা বলেছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো রয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বলেন. ‘নির্বাচন কমিশন ভোটের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টহল অব্যাহত থাকবে।’
পুলিশ সুপার এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেন সবাই নির্বিঘ্নে নিরাপদে ভোট দিতে পারে। যদি কেউ ভোট নিয়ে অন্য কোনো চিন্তা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।‘
জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, কোনো কেন্দ্রে সমস্যা হলে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে। এসব বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সব প্রার্থীকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।