বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কে এই ঠিকাদার স্বপন চৌধুরী?

  •    
  • ২৬ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:৪৮

প্রভাব খাটিয়ে ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ চুক্তির মাধ্যমে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ নিলেও সেগুলো সম্পন্ন না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে স্বপন চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করে প্রতারণা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঠিকাদার মহলে ফজলুল করিম চৌধুরী পরিচিত স্বপন চৌধুরী নামে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। প্রভাব বিস্তার করে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে, যার বেশির ভাগই সরকারি ভবন নির্মাণের কাজ।

ফেনী জেলা বিএনপির সাবেক এই নেতা ক্ষমতার পালাবদলের পর মিশে যান আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে। নানা কৌশল অবলম্বন করে কয়েক বছরের মধ্যেই ঠিকাদারিতে নিজের দুর্বল প্রতিষ্ঠানের অধীনে বাগিয়ে নেন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ। কিন্তু এত কাজ পেয়েও তার দুর্বল প্রতিষ্ঠানের নাম উজ্জ্বল হয়নি, বরং প্রকল্প সম্পন্ন না করা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বেশি।

স্বপন চৌধুরী স্বাক্ষরিত দি বিল্ডার্সের চলমান কাজের একটি নথি এসেছে নিউজবাংলার হাতে। সেখানে দেখা যায়, ২৩টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ চলছে তার প্রতিষ্ঠানটির অধীনে, যেগুলোর প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এগুলোর মধ্যে আছে লালমাটিয়া ন্যাশনাল হাউজিং প্রজেক্ট, ভূমি সংস্কার বোর্ডের নতুন ভবন, তেজগাঁও বিসিক ভবন, নয়াপল্টন এলাকায় মধুমতি টাওয়ার, মিরপুরে এন এইচ এ ভবন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাপ্তান বাজার মার্কেট ভবন, চানখাঁর পুল মার্কেট, ওসমানী ‍উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, আগ্রাবাদে বিএসটিআই ভবন, আফতাবনগর পাওয়ার ‍গ্রিড প্রকল্প, মতিঝিলে অগ্রণী ব্যাংক ভবন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ প্রকল্প, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, লালমনিরহাটে হাসপাতাল নির্মাণ, গোপালগঞ্জ পৌর সুপার মার্কেট, খেপুপাড়া মডেল মসজিদ, মালিবাগে সরকারি কর্মচারীদের বাসভবন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রাস্তা-ড্রেন নির্মাণকাজ, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম বন্দরে শেড নির্মাণকাজ ও যাত্রাবাড়ীতে পিডব্লিউডির ভবন নির্মাণের কাজ।

একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, স্বপন চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান ‘দি বিল্ডার্স’ ছোট কোনো কাজ পাওয়ারও যোগ্যতা রাখে না। কারণ কাজ দেবার আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করা হয় তার আগের কাজ সফলভাবে সম্পাদনের অভিজ্ঞতা ও সুনামের ওপর ভিত্তি করে। এগুলোর কোনোটিই দি বিল্ডার্সের নেই। তবুও বড় বড় সরকারি-বেসরকারি নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অভিযোগ রয়েছে এসব কাজ পেতে ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশিশক্তির প্রয়োগসহ নানা কৌশল অবলম্বন করেছেন ফজলুল করিম চৌধুরী স্বপন।

স্বপন চৌধুরী একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিতে সুসম্পর্ক তৈরি করেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে। তার সুসম্পর্ক ছিল যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং যুবলীগের কথিত নেতা জি কে শামীমের সঙ্গে।

জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে (জেভি) চুক্তি ও জাল কাগজ তৈরির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পান স্বপন চৌধুরী। একইভাবে যাত্রাবাড়ীতে পিডব্লিউডির ভবন নির্মাণের কাজটি পেতে বঙ্গ বিল্ডার্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ (জেভি) চুক্তি করেন স্বপন চৌধুরী।

কার্যাদেশ নিয়ে প্রতারণা

প্রভাব খাটিয়ে ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেভি চুক্তির মাধ্যমে বড় বড় কাজ নিলেও সেগুলো সম্পন্ন না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে স্বপন চৌধুরীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জেভি চুক্তির মাধ্যমে স্বপন কাজ নিতেন নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে। কাজ পেয়ে যাবার পর বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্য কমিশন বুঝিয়ে দিয়ে পুরো কাজের দায়িত্ব নিতেন স্বপন। এরপর আবার সেই কাজ সাব-কনট্রাক্টে অন্য ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে দিতেন। কিছুদিন কাজ করে ওই ঠিকাদার বিল জমা দিলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করতেন তিনি। এভাবে একটি কাজ কয়েকজন ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করতেন স্বপন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাপ্তান বাজার মার্কেট নির্মাণের জন্য ৩০ কোটি টাকার কাজ পায় স্বপন চৌধুরীর দি বিল্ডার্স। কাজটি পাওয়ার পর জিয়াউর রহমান পারভেজ ও এনামুজ্জামান চৌধুরী নামের দুই ঠিকাদারের কাছে কাজটি বিক্রি করেন তিনি। প্রকল্পে কিছু কাজ করেছেন দাবি করে প্রথমে তাদের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা বুঝে নেন স্বপন। এরপর শর্ত ছিল কাজ করে সময়ে সময়ে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে বিল বুঝে নেবেন ওই দুই ঠিকাদার। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপের নির্মাণকাজ শেষে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বিল সিটি করপোরেশনে জমা দেন পারভেজ ও এনামুজ্জামান। তখন সিটি করপোরেশন থেকে ওই বিলের টাকার একটি চেক দেয়া হয় দি বিল্ডার্সের নামে। কারণ খাতায়-কলমে কাজটি পেয়েছে দি বিল্ডার্স।

সেই চেক ভাঙিয়ে নগদ অর্থ পরিশোধের জন্য স্বপন চৌধুরীর কাছে দেয়া হলে ওই টাকার পুরোটাই আত্মসাৎ করেন স্বপন। পারভেজ ও এনাম যখন বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার, তখন তারা বিষয়টি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে জানালে দি বিল্ডার্সের ওই প্রকল্পের কাজ স্থগিত করে দেয়া হয়।

জিয়াউর রহমান পারভেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বপন চৌধুরী আমাদের এসে বললেন কাপ্তান বাজার মার্কেটের কাজটা পেয়েছি, কিন্তু আমার হাতে টাকা নেই। আপনারা কাজটা করে বিল নিয়ে নিয়েন। আমরা তার সঙ্গে চুক্তি করলাম। উনি কিছু কাজ করেছেন বলে দাবি করেছিলেন, সে জন্য অগ্রিম ১৬ লাখ টাকাও দেয়া হয়।

‘নিজেদের টাকা বিনিয়োগ করে আমরা কাজ করলাম। কিন্তু উনি এভাবে প্রতারণা করবেন, আমরা বুঝতেও পারিনি। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল কোনো টাকা ফেরত পেলাম না। এখন তার কাছে টাকা চাইলে হুমকিধমকি দেন। আমি পল্টন থানায় একটি জিডি করে রেখেছি, এখন মামলায় যাব।’

প্রতারণার শিকার অপর ঠিকাদার এনামুজ্জামান চৌধুরী সুনামগঞ্জ জেলা জাসদের সভাপতি। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বপন চৌধুরী যে শুধু আমাদের বিলের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তাই নয়, আমাদের কাছে কাজ বিক্রি করার আগে তিনি এই প্রকল্প দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রেখেছিলেন, যা আমাদের কাছে তিনি গোপন রাখেন। যখন বুঝতে পারলাম আমরা ভয়ংকর প্রতারণার শিকার, তখন কাজ বন্ধ করে দিলাম।’

স্বপন চৌধুরী বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে এসব প্রতারণা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন এনামুজ্জামান চৌধুরী।

ইতিমধ্যে দি বিল্ডার্সের কাপ্তানবাজার মার্কেট ভবন, চানখাঁরপুল মার্কেট ভবন ও ওসমানী উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্পের কার্যাদেশ স্থগিত করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীলদের কোনো বক্তব্য না পাওয়া গেলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, ‘দি বিল্ডার্সের নানা অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ মেয়র ফজলে নূর তাপসের কাছে এসেছে। সে জন্য তিনি ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ স্থগিত করে দিয়েছেন।’

স্বপন চৌধুরীর প্রতারণা থেকে বাদ পড়েননি সরকারি কর্মকর্তারাও। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২০ তলা ভবন নির্মাণের কাজে বিনিয়োগ করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা খুইয়েছেন সরকারি কলেজের অধ্যাপক মো. কাইয়্যুম।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বপন চৌধুরী আমার কাছে এসে একদিন বললেন, তার প্রতিষ্ঠান ও বঙ্গ বিল্ডার্স যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে। কিন্তু তার হাতে টাকা না থাকায় কাজ এগোচ্ছে না। তাই তিনি আমাকে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। বিনিময়ে লভ্যাংশসহ বিলের টাকা আমি পাব, এমন আশ্বাস দেয়।

‘তখন আমি তার কথা বিশ্বাস করে ব্যাংক লোন ও আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে তার ওই প্রজেক্টে বিনিয়োগ করি। পরে বিলের আড়াই কোটি টাকা আনতে গেলে জানতে পারি, স্বপন আগেই সেই টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন।

‘স্বপনের এই প্রতারণার পর থেকে এখন প্রতি মাসে ব্যাংক ঋণ আর আত্মীয়-স্বজনদের দেনার ভার আমার কাঁধে। স্বপন তো আড়াই কোটি টাকা নিয়েই গেছে, আরও আড়াই কোটি টাকা আমার এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে।’

শিক্ষক কাইয়্যুম আরও বলেন, ‘আমি গত এক বছর ধরে তার কাছ থেকে টাকা চেয়ে যাচ্ছি। কিন্তু উল্টো আমাকে হুমকি দিচ্ছেন, ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করছেন। এমনকি তিনি অন্য এক মামলার আসামির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জাল করে সেখানে আমার নাম লিখে আমাকে হয়রানি করছেন।’

স্বপন চৌধুরীর এই প্রতারণায় রাজধানীর গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষক। সেটির তদন্তকাজ শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেখানে স্বপন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওই শিক্ষকের প্রায় ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, স্বপন চৌধুরী একই প্রকল্পের কাজ আগে আরও দুইবার অন্য ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। এতে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয় ব্যবহার করে স্বপন চৌধুরী এসব প্রতারণা করে যাচ্ছেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে স্বপন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অন্তত ছয়টি প্রতারণা-অর্থ আত্মসাৎ মামলা ও জিডির খোঁজ পেয়েছে সিআইডি।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ফজলুল করিম চৌধুরী স্বপনের তিনটি নম্বরে ফোন করে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার অফিসের নম্বরে ফোন করা হলে একজন কর্মকর্তা তা রিসিভ করেন। দি বিল্ডার্সের চলমান কাজগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে নিজ পরিচয় না দিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজের বিষয়ে এমডি সাহেব জানেন, এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না।’

স্বপন চৌধুরী কোথায় আছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু জানি না।’

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দি বিল্ডার্সের প্রায় প্রতিটি প্রকল্প ব্যবহার করে এমন প্রতারণা করেছেন। আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি-হামলা-মামলার ভয় দেখান স্বপন চৌধুরী। তার ভুয়া মামলায় অনেকে জেল খাটছেন। একাধিক প্রতারণা মামলায় স্বপন চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর