সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রাম থেকে শুক্রবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ওই যুবকের মা-বাবা পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন, ছেলে আত্মহত্যা করেছিলেন চারদিন আগে। পুলিশের ও আইনি জটিলতায় টাকা খরচের ভয়ে তারা মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।
মৃত যুবকের নাম আব্দুল করিম। তিনি পিকআপ ভ্যান চালাতেন। তার মা নাজমা খাতুন আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। করিমের বাবা আলহাজ উদ্দিন কৃষিকাজ করেন।
শাহজাদপুর থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করিমের মা-বাবাসহ চারজনকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে করিমের বাবা আলহাজ উদ্দিন তার কাছে গিয়ে ছেলের মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘ছেলে আত্মহত্যা করেছে, মরদেহ ভয়ে আমরা লুকায় রাখছি। ছেলের মা এখন অনেক কান্নাকাটি করছে।’
সাইফুল জানান, তিনিই পরে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সকালে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি শাহিদ মাহমুদ খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজমা খাতুন জানান যে তার বড় ছেলে নাসিরের স্ত্রী গত বছর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ নিয়ে পুলিশ ও আদালতে তাদের অনেক হয়রানি হয়।
নাজমা পুলিশকে জানান, ছোট ছেলে করিম মাদকাসক্ত ছিলেন। চার দিন আগে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাতে নিজের ঘরে ঢুকে ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
ওসি বলেন, ‘মরদেহ কেন লুকিয়ে রাখা হলো জিজ্ঞেস করলে নাজমা জানান যে সামনে নির্বাচন, তাতে অনেক টাকা খরচ হবে। সেজন্য কিছু টাকা জমিয়ে রাখা আছে। আগের বার ছেলের বউয়ের আত্মহত্যার মামলা মীমাংসা করতে তার বেশকিছু জমি বিক্রি করতে হয়েছিল। এবারও আইনি জটিলতায় পড়ে টাকা খরচ হতে পারে এই শঙ্কায় তারা ছেলের মরদেহ গুমের সিদ্ধান্ত নেন।
'মরদেহ গুমের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'