বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মসজিদে দোয়ার আয়োজন করা হলো বিএনপির উদ্যোগে। হিন্দুদের মন্দিরসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়েও করা হয় বিশেষ প্রার্থনা।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতারা। ছিলেন জোটের শরিক দলের নেতারাও।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই মুহূর্তে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার রোগের বিস্তারিত না জানলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নেত্রী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার দাবিও করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
তবে ২০১৮ সালে দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত নেত্রীকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে এখনও অনুমতি দেয়নি সরকার। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে সাজা স্থগিত করিয়ে পৌনে দুই বছর আগে বিএনপি নেত্রীকে বাসায় ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন। এই ধারা দ্বিতীয়বার প্রয়োগের সুযোগ নেই।
তবে বিএনপি মন্ত্রীরা এই ব্যাখ্যা মেনে নিতে নারাজ। তাদের নেত্রীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক নানা কর্মসূচি পালন করছে দল। এর অংশ হিসেবে এই দোয়ার আয়োজন করা হয়।
বায়তুল মোকাররমে এই দোয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ,নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ছাড়াও আরও ছিলেন আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, কৃষকদল সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল।
বিএনপির শরিক ও সমমনা দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।
বায়তুল মোকাররম ছাড়াও সারা দেশেই সব ধর্মের প্রতিষ্ঠানগুলোতে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনার এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
দোয়া শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি, আল্লাহতালা যেন খালেদা জিয়াকে অতিদ্রুত সুস্থ করে আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।’
তার নেত্রীকে দেশের বাইরে যেতে না দেয়ার পেছনে সরকারের প্রতিহিংসা কাজ করছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ, যা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে শেষ করে দেয়ার জন্য সরকার তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না।’
নামাজের আগে থেকেই মসজিদ এলাকায় পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়। মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে ও পল্টন মোড়ে বিপুল সংখ্যায় পুলিশ মোতায়ান ছিল।
দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা দ্বিতীয়বার ব্যবহার করে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যেরও জবাব দেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘আইনজীবীরা বলেছে, কোনো বাধা নেই। সুতরাং আইনের কথা বলে লাভ নেই। বাধা দিচ্ছে সরকার।’