নির্বাচনি আচরণবিধি লঙঘন করে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশের আলী ব্যান্ড বাজিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর হবে কুমারখালী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার।
নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নওশের আলী নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে শত শত নেতাকর্মী ও ব্যান্ড বাজিয়ে দুপুরে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনী বিধিমালার ক্রমিক নং ১১ তে স্পষ্টভাবে বলা আছে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার সময় কোন প্রকার মিছিল কিংবা শো-ডাউন করা যাবে না।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য নওশের আলীর কয়েকশ নেতাকর্মী ব্যান্ড পার্টির সঙ্গে গাড়িবহর নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খোকন ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ।
জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী নওশের আলী সকালেই আমার সমর্থকদের হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।’ তবে, এসব ব্যাপারে এখনি কোন অভিযোগ করবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে নৌকার প্রার্থী নওশের আলী বলেন, ‘আমি কোন ব্যান্ড পার্টি নিয়ে যাইনি।’
কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিরিনা আক্তার বানু বলেন, ‘দুপুরে চেয়ারম্যান নওশের আলী আমার অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অফিসের বাইরে কত লোক ছিল তা আমার জানা নেই। তবে, নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে থাকলে যাচাই করার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্য প্রার্থীর সমর্থকের ভিজিডির কার্ড (মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বিশেষ কার্ড) রেখে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
চেয়ারম্যান নওশের আলীর বিরুদ্ধে মোছা. খালেদা খাতুন নামের এক নারীকে চাল না দিয়ে ভিজিডির কার্ডটি নিয়ে নেয়ার অভিযোগ দিয়েছেন তার স্বামী।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীর স্বামী আমজাদ হোসেন লিখেছেন, ‘বুধবার আমার স্ত্রী খালেদা খাতুন ভিজিডির কার্ড নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে চাল তুলতে যান। কিন্তু চাল নিতে ২০০ টাকা জমা নিয়ে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর না করে কার্ডটি রেখে দেন। অন্য প্রার্থীকে ভোট দেবে অনুমান করে তিনি খালেদার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেন।’
এ ব্যাপারে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউর রহমান খোকন বলেন, ‘এ ঘটনা অমানবিক।’
নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশের আলী এ ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কারোর কার্ড নেইনি।’
এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘ভূক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছি, এ বিষয়ে আগামী বুধবার শুনানী হবে। উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। শুনানি শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’