রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লাবাহী যে গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, সেটি চালাচ্ছিলেন একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। রাসেল খান নামের ওই কর্মী চালক মো. হারুনের কাছ থেকে চাবি নিয়ে সায়েদাবাদ থেকে গাড়িটি নিয়ে রাস্তায় বের হন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পল্টন মডেল থানায় মতিঝিল বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মতিঝিল বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) আ. আহাদ।
তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ লিখছেন যে চালক ওই গাড়িতেই ছিলেন এবং তিনি পালিয়ে যান। তবে ওই সময় চালক হারুন গাড়িতে ছিলেন না। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও গ্রেপ্তার রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি যে চালক ওই সময় গাড়িতে ছিলেন না।’
ডিসি মতিঝিল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত গাড়ির চালক হারুন। কিন্তু তিনি রাসেলকে দিয়ে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। হারুনকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
গ্রেপ্তার রাসেলের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাসেল সিটি করপোরেশনের কেউ নয়। তবে সে সিটি করপোরেশনের কিছু কাজ করে। রাসেল জানিয়েছে যে আত্মীয়স্বজন সিটি করপোরেশনে চাকরি করার সূত্রে সে সিটি করপোরেশনে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করত। আগেও সে গাড়িটি চালিয়েছে। আর গাড়ির চাবি হারুনই তাকে দিয়েছিল।
‘রাসেল কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সও দেখাতে পারেনি।’
ডিসি আ. আহাদ বলেন, ‘বুধবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে গুলিস্তানে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান রাস্তা পার হওয়ার সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ট্রাক (রেজি. নম্বর ঢাকা মেট্রো-শ-১১-১২৪৪) তাকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়।
গাড়ির ধাক্কায় ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দুপুর পৌনে ১২টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আ. আহাদ বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালানোর সময় টহল পুলিশ ও পথচারীরা ট্রাকের চালক রাসেল খান এবং গাড়িতে থাকা পরিচ্ছন্নতাকর্মী গোলাম রব্বানী ও বেলালকে আটক করেন। গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
‘সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বুধবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহ আলম দেওয়ান মামলা করেছেন।’