দেশের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় চার দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের দাপটে জবুথবু পুরো জেলা।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বের হচ্ছেন না। যাদের নানা প্রয়োজনে বের হতে হচ্ছে তারা পড়ছেন বেকায়দায়।
নওগাঁ সদর উপজেলার চকআতিতা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চার দিন থ্যাকা ব্যাপক কুয়াশা আর শীত পড়িছে। জমিত কাম-কাজ করতে খুব অসুবিধা হচ্চে। শরীর পুরাডাই ঠান্ডা হয়্যা যাচ্চে।’
হাটচকগৌড়ি গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এতই শীত আর কুয়াশা শুরু হছে যার কারণে মাঠোত কাম করবার ল্যাগলে খুব কষ্ট হচ্ছে হামাগেরে। অ্যানা (একটু) করা কাম করিচ্ছি আবার অ্যানা করা আগুন ধরা তাপ পোহাচ্ছি। কৃষক মানুষ হামরা, কাম তো করাই লাগবে।’
জেলার সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে বেশ বেলা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
শীত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে নতুন রোগী।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের অনেকে বাড়ির আঙিনায় বা ফুটপাতে আগুন জ্বালিয়ে কিছুটা উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ চায়ের দোকানে চুলার পাশে বসে চা খাচ্ছেন ও চুলার উত্তাপে শরীর গরম করছেন।
বদলগাছী উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার ছিল ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা আরও নিচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
শহরের মুক্তির মোড় এলাকার ভ্যানচালক কসিম উদ্দিন বলেন, ‘সকাল আর রাতোত বেশি ঠান্ডা লাগিচ্ছে। ঠান্ডার কারণে মাঝে মাঝে মনে হয় হাত অবশ হয়্যা যাবে। আজক্যা তো সূর্যের দেখাই নাই। অনেক কষ্ট হচ্ছে ভ্যান চালাতে।’
তাজের মোড়ের আরেক রিকশাচালক শাহজাহান আলী বলেন, ‘ভোর থ্যাকা রিকশা চালাই। আজক্যা মনে হচ্ছে বেশি ঠান্ডা পড়িছে। রিকশা চালাতে হাত-পাও ঠান্ডা হয়্যা যাচ্চে। শীত আসলেই হামাকেরে কষ্ট ব্যাড়া যায়। কী আর করার আছে? পেটের দায়ে তো কাম করাই লাগবে।’