দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চমানের ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধা থাকলেও এর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই (ইন্টারনেট) সেবা থাকলেও দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিড়ম্বনায় পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ২০১২ সালে সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে ওয়াইফাই সংযোগের আওতায় আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুরুর দিকে গতি ১৫ এমবিপিএস থাকলেও পরে তা ৬০ এমবিপিএস করা হয়। আবার ক্যাম্পাসজুড়ে ওয়াইফাই জোন করার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তা নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে সীমাবদ্ধ থাকে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটি মাত্র ওয়াইফাই লাইন। তাই ওয়াইফাই সংযোগের ৮ বছরেও দুর্বল গতির কারণে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার তো দূরের কথা, মোবাইলেও তা সংযোগ করা যায় না।
নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারায় ক্যাম্পাসে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে ই-লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছেন তারা।
এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে মূলধন অনুদান (যন্ত্রপাতি, যানবাহন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, অন্যান্য অনুদান) খাতে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে জবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোনেই মিলছে না ওয়াইফাই কানেকশন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্লাস ও পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ সময় ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। অথচ ঠিকমতো ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। অনেক সময় সংযোগ পেলেও গতি ধীর হওয়ায় ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জীবন কৃষ্ণ জানান, ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী কম থাকে, সেদিন তো ইন্টারনেটের গতি ভালো থাকার কথা। কিন্তু থাকে না। এতে পড়ার সময় কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে ইন্টারনেটে সেগুলোর সমাধান পাওয়া যায় না।
কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সারোয়ার জানান, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার পরও আমরা নেটের সংযোগ ঠিকমতো পাই না। ওয়াইফাই ওপেন করলেই লিমিট একসেস দেখায়। এ কারণে নেটওয়ার্কের চিহ্ন দেখা গেলেও তা ব্যবহার করতে পারি না’।
মিরপুর থেকে আসা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, ‘পরীক্ষা দুপুরে থাকলেও আসতে হয় সকালেই। ক্যাম্পাসে অনেকটা সময় বসে থাকতে হয়, কিন্তু এই সময়টাতেও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সর্বনিম্ন ৫১২ কিলোবাইট থেকে সর্বোচ্চ ২ মেগাবাইট গতিতে ৫০টি কম্পিউটারের মাধ্যমে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
‘তবে দ্রুত আমরা পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনব। যেসব জায়গায় নেই সেখানেও ওয়াইফাই দেব।’
কবে নাগাদ সংযোগ বাড়ানোর কাজ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ এসেছে। তাই এই অর্থবছরেই সংযোগ বাড়ানো হবে।’