বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জবির নতুন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাকর্মীদের মানবেতর জীবন

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ০৯:৫৩

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তাকর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়তি ডিউটি করলেও আমরা বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না; বরং এখানে প্রতি মাসে নিজেদের পকেট থেকে বিদ্যুৎ বিল (মিটার কার্ডে রিচার্জ) কমপক্ষে ১ হাজার টাকা ও গ্যাসের সিলিন্ডারে ১২০০ টাকা দিতে হয়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। মানবিক দিক থেকে হলেও আমাদের ভাতা বাড়িয়ে দিলে ভালো হয়।’

কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসে নিয়োগ প্রাপ্ত চার নিরাপত্তাকর্মী মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ক্যাম্পাস ভবনের এক কোনায় থাকার জায়গা মিললেও সেখানে সুপেয় পানি বা শৌচাগারের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর ওপর আবার জনমানবহীন এলাকায় সাপ ও শিয়ালের ভয়ে দিন কাটছে তাদের।

এদিকে প্রায় ২০০ একর জায়গায় মাত্র চারজন নিরাপত্তাকর্মীকে দায়িত্ব দেয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন তারা। আট ঘণ্টার নিয়ম থাকলেও চব্বিশ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করেও তাদের দেয়া হচ্ছে না কোনো বাড়তি ভাতা। উপরন্তু নিজেদের পকেট থেকেই বাড়তি ব্যয় হচ্ছে প্রতি মাসে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের কোনার একটি বিল্ডিংয়ে তারা বাস করছেন। এ সময় তারা জানান, প্রতিদিন ভোরে ও বিকেলে পুরো ক্যাম্পাস একবার করে টহল দেন তারা। একবার টহল দিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগে, যা তাদের হেঁটেই করতে হয়।

জনমানবহীন এ ক্যাম্পাসে সাপ, শিয়ালের ভয়ে দিন কাটছে নিরাপত্তাকর্মীদের। ছবি: নিউজবাংলা

এদিকে বিল্ডিংয়ে নেই কোনো শৌচাগার বা পানির সংযোগ। রাতে সাপ ও শেয়ালের ভয় মাথায় করে দূরের একটি শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় তাদের। একজন গেলে লাঠি হাতে আরেকজনকে পাহারায় থাকতে হয়। সুপেয় পানির ব্যবস্থাও নেই সেখানে।

এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করায় বাজার, যাতায়াতসহ প্রতি মাসেরই বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তাকর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাড়তি ডিউটি করলেও আমরা বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না; বরং এখানে প্রতি মাসে নিজেদের পকেট থেকে বিদ্যুৎ বিল (মিটার কার্ডে রিচার্জ) কমপক্ষে ১ হাজার টাকা ও গ্যাসের সিলিন্ডারে ১২০০ টাকা দিতে হয়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাই মানবিক দিক থেকে হলেও আমাদের ভাতা বাড়িয়ে দিলে ভালো হয়।’

চলতি বছরের শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন ক্যাম্পাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক ১৫ জন আনসার মোতায়েন করেছিল। প্রায় ৭ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে কাজ শুরু করে তারা। তাদের জন্য আসবাবপত্রসহ প্র‍য়োজনীয় সামগ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কিনে দেয়া হয়।

এমনকি সেখানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সুবিধা না থাকায় তাদের জন্য মিটারের কার্ড বিল ও গ্যাস সিলিন্ডার কেনার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা হয়। তবে দুই মাসের মাথায় তিন লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফেরত দিয়ে তারা চলে যায়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিতসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্য থেকে ৪ জন চুক্তিভিত্তিক ও স্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীকে নতুন ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়।

নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. সাইদুর রহমান (নিরাপত্তা শাখা) বলেন, স্থায়ী যারা আছে, তাদের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে এ বিষয়টি চলছে৷

তবে তাদের বিষয়ে প্রশাসনে একটি ফাইল জমা দিয়েছি। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি মুখেও তাদের বাড়তি খরচের বিষয়টি জানিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তাদের মানবেতর জীবনযাপন সম্পর্কে আমি আগেও শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি। ফাইলটি দ্রুত পাস করানোর ব্যবস্থা করব।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক জানান, কিছুদিন আগে ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়ে তাদের বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্টদের ফাইল জমা দিতে বলেছি। দ্রুতই ফাইল পাসের ব্যবস্থা করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর