মানিকগঞ্জ পৌর শহরের যানজট নিরসনে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করা হয়েছে এক বছর আগে। অথচ সড়ক প্রশস্ত করার সেই উদ্যোগ কোনো কাজেই আসেনি খালপাড় এলাকার সরু সেতুর জন্য।
শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ওপর নির্মিত সেতুটি সরু হওয়ায় দুই পাশে সব সময়ই যানজট লেগে থাকে। সড়ক চার লেন করা হলেও এখানে নতুন সেতু করা যায়নি জমির মালিকানা নিয়ে পুলিশের করা রেকর্ড সংশোধনী মামলার কারণে।
মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে জানা যায়, পৌর এলাকার যানজট ও যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের বেউথা মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করা হয়।
এই প্রকল্পে খালপাড় এলাকায় নতুন সেতু নির্মাণের কথা ছিল। এখানে সেতুর কাছের জমির মালিকানা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পুলিশ বিভাগ। জমির পরিমাণ নিয়ে বিরোধ থাকায় প্রায় ৬ বছর আগে রেকর্ড সংশোধনীর একটি মামলা করে পুলিশ। সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকায় নতুন সেতু নির্মাণ করতে পারছেন না তারা।
স্থানীয় প্রশাসন থেকে জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৬ সালের মানিকগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাঝে মধ্যেই সড়ক বিভাগ সংস্কার করে। তবে সেতুটি সরু আর যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় সকাল-সন্ধ্যা যানজট লেগে থাকে এখানে।
যানজট নিরসনের ট্রাফিক পুলিশ রাখা হলেও তেমন কাজে আসে না।
জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সুলতানুল আজম খাঁন আপেল বলেন, ‘শহরের রাস্তাঘাটের অনেক উন্নতি হয়েছে, কিন্তু খালপাড়ের সেতুটির কারণে মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন যানজট লেগেই থাকে।
‘শহরে আসা মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। খালপাড় সেতুর পাশে নতুন সেতু করার জন্য গত ১৪ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মিটিংয়েও আলোচনা করেছি।
পৌর মেয়র রজমান আলী বলেন, ‘আমার পৌরসভায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস রয়েছে। বিভিন্ন অফিসের লোকজন এবং প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কাজে শহরে আসে। খালপাড় ছাড়া পৌর এলাকার কোথাও কোনো যানজট নেই। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এসপি, ডিসি ও সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি।’
মানিকগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে, কিন্তু খালপাড় সেতুর পূর্বপাশের জমিতে রেকর্ড সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশের করা মামলার কারণে সেখানে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। মামলা শেষ হলেই সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের মোবাইলে ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।