বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ: জাতিসংঘ

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:৪৯

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যেটি কি না জাতিসংঘের নির্ধারিত উত্তরণের তিনটি মানদণ্ড পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই অর্জন বিশ্বদরবারে এই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আরও অধিকতর উন্নয়নের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।

জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের মধ্য দিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটল বাংলাদেশের।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় বুধবার এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রাতে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।

এই ঐতিহাসিক অর্জনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার এক মহান মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের জাতির পিতা, মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে এই অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের যে অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন যাত্রা- এটি তারই একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এই সাফল্যের অংশীদার এই দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।’

বাংলাদেশ এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ বা গ্র্যাজুয়েশনের মানদণ্ড পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের সুপারিশ লাভ করেছিল।

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ৩০ জুন বা তার আশপাশের সময়ে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

সিডিপি একই সঙ্গে বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরব্যাপী প্রস্তুতির সময় প্রদানের সুপারিশ করেছে। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ এরই মধ্যে সিডিপির সুপারিশ অনুমোদন করেছে। আশা করা হচ্ছে যে পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল শেষে বাংলাদেশের উত্তরণ ২০২৬ সালে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি কি না জাতিসংঘের নির্ধারিত উত্তরণের তিনটি মানদণ্ড পূরণের মাধ্যমে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এই অর্জন বিশ্বদরবারে এই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আরও অধিকতর উন্নয়নের যাত্রাকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।

প্রস্তুতির এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সব সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকবে। তা ছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

বাংলাদেশ এমন একটি সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে যখন সমগ্র দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।

গত দুই দশকে কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ছবি: সাইফুল ইসলাম

উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখাসহ মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নেতৃত্বে বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় নীতিকৌশল ও পদক্ষেপ প্রণয়ন করছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

এদিকে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপাল ও লাওসের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই তিন দেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। সাধারণত প্রস্তুতির জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়। করোনার কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই বাড়তি সময় দেয়া হলো।

সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশ তুলনামূলক দুর্বল, সেসব দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭১ সালে প্রথম স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা এক টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়েছে।’

এমন অর্জনকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত উল্লেখ করে রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময় এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আমাদের কী হতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর