বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা চান রাষ্ট্রপতি

  •    
  • ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৬:৫৯

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে উন্নয়নের পথে অগ্রসরমাণ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে ঐক্যের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানিয়েছেন।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজন ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে সবার মধ্যে ঐক্য। ঐক্য গড়ে তুলতে হবে সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।

‘আসুন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে ধর্ম-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’

বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম, স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা ও পরবর্তী রাজনীতিসহ নানা দিক তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলার মানুষের মুক্তি অর্থাৎ সোনার বাংলা বিনির্মাণ।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তৎকালীন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির সঙ্গে তুলনা করেন। কারণ সে সময় বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে অনেক বাধা ছিল, যা অতিক্রম করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো ছিল খুবই কঠিন।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে উন্নয়নের পথে অগ্রসরমাণ বলেও মন্তব্য করেন আবদুল হামিদ।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়নের নান দিক তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এখন পৃথিবীর যে ১১টি দেশকে ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য উদীয়মান এগারো বলে অভিহিত করা হয়, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। গত এক দশকে গড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং পর পর তিন বছর ৭ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি অর্জনের পর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে উন্নীত হয়। করোনার প্রভাব সত্ত্বেও যে কয়েকটি দেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

‘বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে বেড়ে দুই হাজার ৫৫৪ ডলার হয়েছে। জিডিপির আকার ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

‘রপ্তানি প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ৩৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭৪৪ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার মিলিয়ন ডলারে, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।’

করোনাকালে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেন আবদুল হামিদ। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং তথ্য কমিশন সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দল-মতনির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ এবং অংশীজনদের সমন্বিতভাবে কাজ করে যেতে হবে।’

পরিবেশ সুরক্ষা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বলিষ্ঠ ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্বীকৃত বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬-এ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভি-২০-এর সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতামত, বক্তব্য ও অবস্থানসহ সার্বিক ভূমিকা আন্তর্জাতিক মহলে বহুল আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে।’

বিদ্যুত খাতে সাফল্যসহ সরকারের মেগা প্রকল্প নিয়েও কথা বলেন আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ এখন সমাপ্তির পথে। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। এ সেতুর বাস্তবায়ন জাতি হিসাবে আমাদের স্বকীয়তা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি, দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীকস্বরূপ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছে।’

এমডিজি অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের এক বিশাল অর্জন বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, “এ সম্মান বাংলাদেশের, এ সম্মান সমগ্র বাঙালি জাতির। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ইউনেসকোর ‘ইউনেসকো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ পুরস্কার প্রবর্তন জাতি হিসেবে বাঙালির আরেকটা অসাধারণ প্রাপ্তি।”

রাষ্ট্রপতি জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২১-৪১ মেয়াদে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রয়োজন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা।

তবে পুষ্টি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিল্পায়ন, অর্থনীতি সুসংহত করা, সুষ্ঠু অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসহ মেধাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে নিরলস কাজ করে যেতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর