জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মূল কপি হাতে পাননি প্রথম বর্ষের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী।
আইডি কার্ডের সফট কপি দেয়া হলেও বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর ও আইটি সেলের সমন্বয়হীনতার কারণে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের মূল কপি তৈরির কাজ আটকে আছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই বছর আগে ২০১৯-২০২০ সেশনে ভর্তি হয়। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হলেও তাদের আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। এরই মধ্যে প্রথম বর্ষ শেষ করে দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণের সময় ঘনিয়ে এলেও আইডি কার্ড হাতে না পাওয়ায় হতাশ শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রিন্টের কাজ আগে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে করা হতো। এখন আইটি সেলকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা রেজিস্ট্রারের অনুমতি ছাড়া কাজটি করতে পারবে না।
তাই এ দীর্ঘ সময়েও কোনো দপ্তরই আইডি কার্ড প্রিন্টের উদ্যোগ নেয়নি। এ সমন্বয়হীনতার কারণে আইডি কার্ডের মূল কপি হাতে পাননি শিক্ষার্থীরা।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বিভিন্ন সময়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। গণপরিবহনে ভ্রমণসহ বিভিন্ন কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে সুবিধা নিতে না পারায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়।
গত আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের সফট (অনলাইন) কপি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ছাড়া অন্য কোথাও এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘আমি যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তার কোনো পরিচয়ও বাইরে দিতে পারি না আইডি কার্ড না থাকায়। কবে পাব তাও জানা নেই।’
গণিত বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন, ‘আইডি কার্ড না থাকায় বাসে হাফ পাস দিতেও সমস্যা হয়। আমাকে জবির শিক্ষার্থী হিসেবে কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। সফট কপি প্রিন্ট করে লেমিলেটিং করার পরও তারা মানতে চায় না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে নোটিশ না পেলে আমরা এ কাজ করতে পারব না। তারা অনুমতি দিলেই আমরা কাজ শুরু করব।
জবির আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য বলেন, ‘বুধবার থেকেই আইডি কার্ড প্রিন্ট করা শুরু হবে। আশা করি আগামী সপ্তাহেই শিক্ষার্থীদের হাতে আইডি কার্ড তুলে দিতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, আইটি সেল অনুমতি চাইলে অনুমতি দেয়া হবে। জবির শিক্ষার্থী হিসেবে তারা আইডি কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা রাখে এবং এটা তাদের অধিকার। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার বাস পরিচালকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মিটিংয়ের পর আইডি কার্ড প্রদর্শন করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সদরঘাটগামী বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।