বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন হিসাব: জিডিপির আকার বেড়েছে, কমেছে প্রবৃদ্ধির হার

  •    
  • ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০

নতুন হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পুরনো হিসাবে এটি ছিল একটু বেশি, ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার থেকে ২১৪ ডলার বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।

নতুন হিসাবে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার (মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি) বেশ খানিকটা বেড়েছে; মাথাপিছু আয় বেড়ে আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তবে, কমেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নতুন হিসাব অনুযায়ী, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে চলতি বা বর্তমান মূল্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। পুরনো হিসাবে এই অঙ্ক ছিল ৩০ লাখ ১১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

নতুন হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পুরনো হিসাবে এটি ছিল একটু বেশি, ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার থেকে ২১৪ ডলার বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।

তবে, এটি চূড়ান্ত নয়, প্রাথমিক বা সাময়িক হিসাব। অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ) তথ্য হিসাব করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস। চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপির আকার, প্রবৃদ্ধির হার ও মাথাপিছু আয়সহ অন্যান্য সূচক কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে। বরাবরই এমনটা হয়ে থাকে।

মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ভিত্তি বছর পরিবর্তন করেছে সরকার। এখন থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে নতুন ভিত্তি বছর ধরে জিডিপিসহ অর্থনীতির সব হিসাব-নিকাশ প্রকাশ করবে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এতদিন ১৫ বছর আগের ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি বছর ধরে এ সব তথ্য প্রকাশ করা হতো।

রাজধানীতে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। ছবি: নিউজবাংলা

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় জিডিপির হিসাব তৈরির নতুন ভিত্তিবছর ২০১৫-১৬ অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিবিএসের জিডিপির হিসাব তৈরির নতুন ভিত্তি বছর অনুমোদন দিয়েছেন। এতেই অর্থনীতির এই আকার বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে গেছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিবিএস এতোদিন ২০০৫-০৬ সালকে ভিত্তিবছর ধরে জিডিপির হিসাব করত। কিন্তু নতুন হিসাব করা হয়েছে ২০১৫-১৬ কে ভিত্তি বছর ধরে।

তিনি বলেন, ‘এই সময়ে অর্থনীতিতে নতুন নতুন ব্যবসা বা খাত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে; আর সে কারণেই অর্থনীতির আকার বেড়েছে।

‘মহামারি করোনার কঠিন সময়ে অনেক দেশ নাজুক অবস্থায় গেলেও বাংলাদেশের সাড়ে ৫ শতাংশের কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা অবশ্যই ভালো অর্জন বলে আমি মনে করি।’

এর আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি বছর ধরে হিসাব করে বিবিএস বলেছিল, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ বা আকার দাঁড়িয়েছিল ২৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে তা বেড়ে ৩১ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

নতুন হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপির আকার হয়েছে ২৯ লাখ ৫১ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। পুরনো হিসাবে ছিল ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা।

নতুন হিসাবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপির আকার হয়েছে ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। পুরনো হিসাবে ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।

এভাবেই নতুন হিসাবে অর্থনীতির আকার বেড়েছে। তবে, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রতি বছরই কমেছে ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে।বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে; ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে যা ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। নতুন হিসাবে তা কমে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ থেকে কমে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ থেকে কমে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ হয়েছে।

তবে, নতুন হিসাবে প্রতি বছরই মাথাপিছু আয় বেশ খানিকটা করে বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে পুরনো হিসাবে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৪ ডলার। নতুন হিসাবে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩২৬ ডলার।

একইভাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলার থেকে বেড়ে ২ হাজার ২০৯ ডলার হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫১ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৪৩ ডলার।

কৃষির উন্নয়ন অর্থনীতির চাকাকে করছে গতিশীল। ছবি: নিউজবাংলা

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম নতুন ভিত্তি বছর শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেরিতে হলেও আমরা নতুন ভিত্তি বছর শুরু করেছি। এখন থেকে জিডিপি, মূল্যস্ফীতি, মাথাপিছু আয়সহ অর্থনীতির সব সূচক ২০১৫-১৬ অর্থবছরকে ভিত্তি বছর ধরে হিসাব করা হবে এবং আমরা এখন থেকে পাঁচ বছর পর পর ভিত্তি বছর পরিবর্তন করব।’

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আরও আগেই নতুন ভিত্তি বছর নির্ধারণ করা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি; এটাকে আমাদের এক ধরনের ব্যর্থতাও বলতে পারেন। অনেক পেছনের ভিত্তি বছরকে ভিত্তি ধরে হিসাব করলে অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার বাস্তব প্রতিফলন পাওয়া যায় না।

‘এই ১৫ বছরে অনেক নতুন নতুন খাত আমাদের অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত হয়েছে, ভালো অবদান রাখছে। সে কারণেই এখন আমরা পাঁচ বছর পর পর ভিত্তি বছর পরিবর্তন করব।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে জিডিপিসহ অর্থনীতির অন্যান্য সূচকের তথ্য নতুন ভিত্তি বছরের পাশপাশি পুরনো ভিত্তি বছরেরটাও প্রকাশ করা হবে। কিছুদিন পর শুধুমাত্র নতুন ভিত্তি বছরেরটা প্রকাশ করা হবে। পুরনোটা আর প্রকাশ করা হবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর