রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ও রিশিকুল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ের গেজেট প্রকাশে দুই মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর আলাদা দুই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
একই সঙ্গে নৌকার দুই প্রার্থীর ফলাফল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না সেটি জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। এতে ওই দুই ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিট আবেদনকারী হযরত আলী ও মুখলেসুর রহমান মুকুলের আইনজীবী এআরএম হাসানুজ্জামান।
রিট আবেদনকারী হযরত আলী গোগ্রাম ইউপি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। অন্যদিকে মুখলেসুর রহমান মুকুল রিশিকুল ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিলেন।
১১ নভেম্বর এ দুই ইউপির ভোট হয়। ভোট গণনার পর ফলাফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগ করেছেন তারা। সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ করেছিলেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন করেও অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন দুই প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে মুখলেসুর রহমান দাবি করেছিলেন, নির্বাচনে তিনি অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। ১০টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের দেয়া ফলাফল শিট অনুযায়ী তিনি পেয়েছিলেন ৭ হাজার ২২ ভোট। আর আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী শহিদুল ইসলাম টুলু পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৩৪৬ ভোট।
মুখলেসুরের অভিযোগ, তিনি ৬৭৬ ভোটে জিতেছিলেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফলাফল যাওয়ার পর তিনি সেটি ঘোষণা দিতে গড়িমসি করেন। শেষে গভীর রাতে ফল পাল্টে নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম টুলুকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হযরত আলী দাবি করেন, প্রিজাইডিং অফিসারদের দেয়া ফলাফল শিট অনুযায়ী ১০টি কেন্দ্রে আনারস প্রতীকে তিনি পেয়েছিলেন ৯ হাজার ৮০১ ভোট। নৌকার প্রার্থী মজিবর রহমান পেয়েছিলেন ৯ হাজার ২৮৭ ভোট। হযরত আলী ৫১৪ ভোট বেশি পেয়ে জিতে যান। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তারও ফলাফল ঘোষণায় গড়িমসি করা হয়। শেষে গভীর রাতে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
তাদের আইনজীবী এআরএম হাসানুজ্জামান জানান, ঘোষিত ফলাফলের বিরুদ্ধে দুই প্রার্থীই তার মাধ্যমে আলাদা আলাদাভাবে রিট করেছিলেন। একই হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়েছে। একই রকমের আদেশ হয়েছে। আগামী দুই মাস নির্বাচন কমিশন এই ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করতে পারবে না।
তবে এখনও হাইকোর্টের আদেশের কপি পাননি বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
ভোটের ফল পাল্টানোর অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমানের।