ঘরোয়া আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির রেকর্ড ফাঁসের পর দলীয় পদ হারানো গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হয়েছে রাজবাড়ীর একটি আদালতে। বিচারক সেটির তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন।
রাজবাড়ী ১ নম্বর আমলি আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আবেদনটি করা হয়। মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটির জেলার পৌর শাখার সভাপতি শশী আক্তার আবেদনটি করেন।
বাদীর আইনজীবী মেহেদী হাসান জানান, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সুমন হোসেন অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মেয়র জাহাঙ্গীরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ঘরোয়া আলোচনার মেয়র জাহাঙ্গীরের ওই রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে তাকে (জাহাঙ্গীর আলম) মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করতে শোনা যায়। এরপর আওয়ামী লীগের একটি অংশ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভে নামে।
ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গত ৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরের ব্যাখ্যা চায় আওয়ামী লীগ। এতে তাকে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ১৮ অক্টোবর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মেয়র তার ব্যাখ্যা দেন বলে জানান।
২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ১৯ নভেম্বর তাদের দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাহাঙ্গীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এই বৈঠকের আগে কয়েক দিনে মেয়রের পক্ষে-বিপক্ষে পোস্টারে সয়লাব হয়ে যায় গাজীপুর। মেয়রবিরোধীরা দাবি করতে থাকেন, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আসছে। তবে তার অনুসারীরা দাবি করতে থাকেন, তার কিছুই হবে না।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসার পরপর গাজীপুরের সালনা, টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন মেয়রবিরোধীরা।
টঙ্গীতে মেয়রবিরোধীরা সন্ধ্যার পর আতশবাজি পুড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তারা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ করেন।