ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলাচল করা বাস থেকে ছাত্রলীগ কমিশন পায়, তাই শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের আন্দোলনে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা হামলা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশের আগে মশাল মিছিলের আয়োজন করে সংগঠনটি। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে হাফ পাসের দাবিতে ঢাকার কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নিয়ে ফেরার পথে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়। এ হামলার প্রতিবাদেই এই মশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়।
মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে বিন ইয়ামিন বলেন, ‘আমরাও ছাত্র, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও ছাত্র। আমাদের হাফ পাস লাগে কিন্তু তাদের লাগে না কেন? কারণ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যেসব বাস চলাচল করে, সেখান থেকে ছাত্রলীগের কিছু চাঁদাবাজ কমিশন পায়। মাসিক মাসোহারা পায়।’
তিনি বলেন, ‘বাস কর্তৃপক্ষ যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া দেয়, তাহলে তাদের মাসোহারায় টানাপোড়েন বেড়ে যাবে। তাই তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে হাফ ভাড়ার আন্দোলন বন্ধ করতে চায়।’
ছাত্রলীগ কর্মীদের উদ্দেশে বিন ইয়ামিন বলেন, ‘মাসোহারার টাকায় বড় ভাইদের পকেট ভরলেও আপনাদের কিন্তু বাসে উঠলে ঠিকই ফুল ভাড়া দিতে হবে। সুতরাং বড় ভাইদের ভয়ে চুপ না থেকে শিক্ষার্থীদের কাতারে নেমে আসুন।’
প্রজ্ঞাপন দিয়ে হাফ পাস নিশ্চিতের দাবিও জানান বিন ইয়ামিন।
তিনি বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো আন্দোলন না চাইলে অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস নিশ্চিত করুন।’
সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের যেখানেই অপরাধ সংঘটিত হয়, সেখানেই ছাত্রলীগ জড়িত থাকে। ছাত্রলীগ ছাত্র সংগঠন থেকে সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। হাফ পাস কোনো ভিক্ষা নয়, এটি আমাদের অধিকার। এই অধিকার বাস্তবায়নের আন্দোলনে যারাই হামলা করবে তাদের প্রতিহত করা হবে।’
সায়েন্সল্যাব মোড়ে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতিও আহবান জানান আকরাম।
সমাবেশে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক সালেহ সিফাত, নাট্য ও বিতর্ক সম্পাদক নুসরাত তাবাচ্ছুমসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজ শাখার অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।