পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের পিপলস লিজিং ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) চালুর সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার বিএসইসি’র কমিশন সভায় এ বিষয় আলোচনা শেষ জানানো হয়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ফিন্যান্সিয়াল রিস্ট্রাকচারিংয়ের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে কোম্পানির কার্যক্রম চালু করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে কমিশন।
এর আগে সোমবার পিপলস লিজিংয়ের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। সেখানে কোম্পানিটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর আলোচনা হয়েছে।
সেজন্য বিএসইসি কোম্পানিতে কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দিতে বলেছে। কোম্পানিটিকে স্ট্যাটুটরি অডিট করতে বলা হয়েছে। কোম্পানিটিতে যেসব আর্থিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কমিশন সভা শেষে জানানো হয়, কোম্পানিটির ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আর্থিক বিবরণী ও অন্যান্য কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা পরিচালনা করা হবে।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ২২ নভেম্বর পিপলস লিজিংয়ের নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আলোচনার পর আরও একটি সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
যেখানে বলা হয়, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক এবং পিএলএফের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সাথে আলোচনাপূর্বক ফিন্যান্সিয়াল রিস্ট্রাকচারিং এর বিভিন্ন দিক বিবেচনাপূর্বক কোম্পানির কার্যক্রম চালুকরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে কমিশন।
চলতি বছরের ১৩ জুলাই বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে পপিলস লিজিংয়ের পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয়।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল-উল আলমকে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৫ সালে সেটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১৫ সাল থেকে কোম্পানিটির ধারাবাহিকভাবে লোকসান হতে থাকে।
আলোচিত ব্যাংকার পি কে হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জর কোম্পানিটি এক পর্যায়ে ডুবে গেছে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিপলস লিজিংকে অবসায়নের পক্ষে সম্মতি দেয় সরকার।
ওই বছরের ১৩ আগস্ট থেকে শেয়ারের লেনদেন বন্ধ রাখে ডিএসই ও সিএসই। তবে উচ্চ আদালত আমানতকারীদের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদেশ দেয়।
স্থগিতের আগে কোম্পানিটির ১০ টাকার শেয়ারদর দাঁড়ায় ৩ টাকায়।
এর শেয়ার সংখ্যা ২৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৯৭টি। এই শেয়ারের ২৩.২১ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৬৭.৯৮ শতাংশই ধারণ করে আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ৮.৬২ শতাংশ আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হিস্যা ০.১৯ শতাংশ।