বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টানা তিন দিন দরপতন, গতি ফেরেনি লেনদেনেও

  •    
  • ২৩ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:১৮

সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকে বেলা ১১টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের হাসিমুখই ছিল। এ সময় বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। সেখান থেকে দর পড়তে পড়তে বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েই লেনদেন হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পৌনে এক ঘণ্টায় বিক্রয় চাপে সূচক ৯ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।

প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডসহ গ্রুপের তিন কোম্পানি ও স্কয়ার গ্রুপের দুটিসহ এক ঝাঁক কোম্পানি রেকর্ড ডেট শেষে লেনদেন শুরু করার পরও পুঁজিবাজারে লেনদেনে গতি ফেরেনি।

খাতওয়ারি শীর্ষে থাকলেও ব্যাংকের শেয়ারে আগের দুই দিনের ‍তুমুল আগ্রহে ভাটা পড়েছে কিছুটা। দর হারিয়েছে বেশিরভাগ কোম্পানি সব মিলিয়ে যতগুলো শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে বেশি। আর এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে সূচকে প্রভাব রাখা বড় মূলধনি কোম্পানিও আছে। এ কারণে টানা তৃতীয় দিন কমল সূচক।

সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকে বেলা ১১টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের হাসিমুখই ছিল। এ সময় বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। সেখান থেকে দর পড়তে পড়তে বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েই লেনদেন হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পৌনে এক ঘণ্টায় বিক্রয় চাপে সূচক ৯ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।

এ নিয়ে টানা তিন কর্মদিবস সূচক কমল। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন ৮০ কোটি টাকার মতো বাড়লেও তার আগের দিনের তুলনায় প্রায় পাঁচশ কোটি টাকা কম।

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে গত ৮ নভেম্বর থেকে যখন বাজার ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে। ৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্ট থেকে টানা বেড়ে ১৮ নভেম্বর সূচক দাঁড়ায় ৭ হাজার ৯১ পয়েন্ট পর্যন্ত সূচক বাড়ে। এরপর আবার টানা তিন কর্মদিবস সূচক পড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৩ পয়েন্ট।

দিন শেষে বেড়েছে ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১৭৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টির।

দুই দিন আগে পৌনে আটশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও সেটি সোমবার পাঁচশ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে। আজ সেটি আরও কমে চারশ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেছে।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির তালিকায় ব্যাংক খাতের একটি মাত্র কোম্পানি দেখা গেছে। সেটি হলো ওয়ান ব্যাংক, যেটির দর টানা চার কর্মদিবস বেড়ে ১৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১৮ টাকা ৭০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই খাতে বেড়েছে ১১টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪টির দর।

এদিন সবচেয়ে ভালো দিন গেছে বিমা খাতে। প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন খাতেও দিনটি খারাপ যায়নি। তবে আর্থিক ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে ঢালাও দরপতন দেখা গেছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতেও।

সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার। শেয়ার প্রতি ১৭ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার পর রেকর্ড ডেট শেষে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা। ফলে যারা এই লভ্যাংশ নিয়েছেন, তাদের কোনো লাভ হয়নি বললেই চলে। কারণ ১৭ টাকার মধ্যে ১ টাকা ৭০ পয়সা যাবে কর হিসেবে।

মঙ্গলবার সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা ১০টি কোম্পানি

লভ্যাংশ সমন্বয়ের পর শেয়ারদর কমার কারণে জিপিএইচ ইস্পাতের দাম কমার কারণেও সূচক কমেছে। ওয়ালটন, ব্র্যাক ব্যাংক, আইসিবি, ডাচ বাংলা, স্কয়ার ফার্মার দরপতনের কারণেও সূচক থেকে পয়েন্ট হারিয়েছে।

স্কয়ার ফার্মার শেয়ারে ৬ টাকা লভ্যাংশ যারা নিয়েছেন, তারা রেকর্ড ডেট শেষে প্রথম দিনে মুনাফা পেয়েছেন কিছুটা কম। কারণ, শেয়ার প্রতি ২ টাকা দাম কমেছে।

সূচক থেকে পয়েন্ট কমেছে জেনেক্সিল ইনফোসিস, বেক্সিমকো লিমিটেড ও ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারের দরপতনের কারণেও।

এসব কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড শেয়ারে লভ্যাংশ দেবে সাড়ে তিন টাকা। রেকর্ড ডেট শেষে শেয়ার দর হারিয়েছে ৮০ পয়সা।

জেনেক্সিল ইনফোসিসের শেয়ারের দরপতন হয়েছে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের কারণে। রেকর্ড ডেটে দাম ছিল ১৭১ টাকা ৩০ পয়সা। ১০ শতাংশ শেয়ার সমন্বয়ের পর দাম দাঁড়ায় ১৫৫ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ১৬২ টাকা ৪০ পয়সা।

সূচক পতনের দিন কিছুটা বাড়িয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা, গ্রামীণ ফোন, ওয়ান ব্যাংক, রবি, পাওয়ারগ্রিড, সাইফ পাওয়ারটেক, এসিআই, ইউনিক হোটেল, বিবিএস ক্যাবলস ও এমআই সিমেন্টের দর বৃদ্ধিতে।

এই ১০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে সূচক কিছুটা বেড়েছে

এসব কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা রেকর্ড ডেট শেষে লেনদেন শুরু করেছে। যারা লভ্যাংশ নিয়েছেন, তারা রোববার রেকর্ড ডেটে কিনেছেন ২১৫ টাকা ৫০ পয়সায়। রেকর্ড ডেট শেষে প্রথম দিনেই তারা মুনাফায় আছেন ৫ টাকা ১০ পয়সা। সঙ্গে সাড়ে তিন টাকা নগদ লভ্যাংশ আছে।

দর বৃদ্ধিতে সেরা ১০

মঙ্গলবার লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের এমারেল্ড অয়েল কোম্পানির। কোম্পানি নতুন করে আবারও উৎপাদনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন খবরে আগের দিনের তুলনায় ৯.৯৬ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে মোট ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬৬টি শেয়ার।

দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত এমকি পেন্টিডিসাইডস, যেটির দর তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রতিদিনই ১০ শতাংশের আশেপাশে বাড়ছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৮৪ শতাংশ, ১৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা ২০ পয়সা।

সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়রদর বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ। দাম ৩০ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা।

শীর্ষে থাকা ব্যাংকে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১০০ কোটি টাকার মতো কমেছে

ব্যাংক খাতের ওয়ান ব্যাংক গত কয়েকদিন ধরেই দর বৃদ্ধির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। মঙ্গলবার ব্যাংকটির মোট ১০৩ কোটি ৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭২ শতাংশ। দর ১৭ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮ টাকা ৭০ পয়সা।

নিলামে বিক্রি হয়ে যাওয়া মিথুন নিটিংয়ের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৪৭ শতাংশ। ১০ টাকা ৭০ পয়সা দরের শেয়ার পৌঁছেছে ১১ টাকা ৫০ পয়সায়।

বস্ত্র খাতের আরেক কোম্পানি তসরিফার দর ৭.৪২ শতাংশ আর প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৬.৯৫ শতাংশ।

মুনাফায় ফেরার পরও লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর টানা পতন হতে থাকা আরামিট সিমেন্টের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৪১ শতাংশ। সিলকো ফার্মাও ছিল দর ‍বৃদ্ধির শীর্ষ দশের তালিকায়। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬.২৫ শতাংশ।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

এই তালিকার শীর্ষে জিপিএইচ ইস্পাতের নাম দেখালেও আসলে এর দাম একটা কমেনি।

রেকর্ড ডেট সোমবার দর ছিল ৬৪ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটি এবার ২০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। নগদ লভ্যাংশ সমন্বয় হয় না, তবে বোনাস লভ্যাংশ সমন্বয়ের পর দাম দাঁড়ায় ৫৯ টাকা। তবে দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ৬০ পয়সা।

দরপতনের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডমিনোজ স্টিলেরও ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কোম্পানিটি এবার শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে। রেকর্ড ডেট ছিল সোমবার।

আগের দিন শেয়ারদর ছিল ২৬ টাকা ৯০ পয়সা। বোনাস শেয়ার সমন্বয়ে দাম দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৬০ পয়সা। দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ১০ পয়সা।

এই হিসাবে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে আসলে রহিম টেক্সটাইলের। শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৬০ পয়সা লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট শেষে শেয়ারদর কমেছে ৬.৫৮ শতাংশ। ২৫৮ টাকা থেকে কমে দাম দাঁড়িয়েছে ২৪২ টাকা ৩০ পয়সা।

প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৬.৫২ শতাংশ। শেয়ার দর ১৩৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২৪ টাকা ৭০ পয়সা।

বেশিরভাগ খাতেই লেনদেনের পাশাপাশি কমেছে শেয়ারদর

এ ছাড়া বিচ হ্যাচারির দর ৫.৯৫ শতাংশ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স বা বিআইএফসির শেয়ারদর ৫.৫৫ শতাংশ কমেছে।

শেয়ার প্রতি ১৭ টাকা লভ্যাংশ নেয়ার পর ১৪ টাকা ৩০ পয়সা দাম কমে যাওয়া ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের দর শতাংশের হিসেবে ৫.৪৭ শতাংশ কমেছে।

অন্যগুলোর মধ্যে অলটেক্সের শেয়ারদর ৫.৩২ শতাংশ, এসআইবিএলের দর ৪.৬৭ শতাংশ, সাভার রিফ্রাকটরিজের দর ৪.৫০ শতাংশ, স্টাইলক্রাফটের দর ৪.৪১ শতাংশ এবং সিএপিএম আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের দর কমেছে ৪.২১ শতাংশ।

লেনদেন সেরা ১০

মঙ্গলবার লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট লেনদেন হয়েছে ১৬১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৯১ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৪টি শেয়ার।

তারপরই ছিল ওয়ান ব্যাংক, যার লেনদেন হয়েছে ১০৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৮৩ হাজার ৮টি শেয়ার।

ব্যাংক খাতের আরেক কোম্পানি ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ১৬ হাজার ৫৫০টি শেয়ার।

ফরচুর সুজের মোট ৪৬ লাখ ২৮ হাজার ৭১৭টি শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৪৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

কাট্টালি টেক্সটাইলের লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৮টি শেয়ার।

আইএফআইসি ব্যাংকের ৪০ কোটি ৭২ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলের ৩৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ফার্মার ২৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সাইফ পাওয়ারটেকের ২৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ও ওরিয়ন ফার্মার লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর