কুমিল্লায় নিজ কার্যালয়ে হত্যার শিকার কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল সুযোগ পেলেই গজলসহ বিভিন্ন ইসলামিক সংগীত পরিবেশন করতেন। মৃত্যুর পর ফেসবুকে ঘুরছে এসব গানের বেশ কিছু ভিডিও।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের মাইক্রোফোন হাতে কাউন্সিলর সোহেল ইসলামি সংগীত পরিবেশন করছেন।
নগরীর পাথুরীয়াপাড়ার বাসিন্দা আহসান হাবিব বলেন, ‘কাউন্সিলর সোহেল নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন।’
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, চলতি বছর ৬ নভেম্বর নিজ এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলের স্টেজে বসে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করছেন কাউন্সিলর সোহেল। এর পর হাজারও শ্রোতাকে করতালি দিতেও দেখা গেছে।
কুমিল্লা সিটি মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘কাউন্সিলর সোহেল নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন। পাশাপাশি সুযোগ পেলেই গজল গাইতেন। তার গানের গলা ছিল ভালো।’
তিনি বলেন, 'সোহেলের এলাকার কোনো হিন্দু বাড়িতে অনুষ্ঠান থাকলেও সবার আগে এগিয়ে যেতেন। তিনে ছিলেন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র। আমাদের দুজনের সম্পর্কটা ছিল আপন ভাইয়ের মতো।’
নিজ কার্যালয়ে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ওই কাউন্সিলরসহ গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ৫ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম জানান, বিকেল ৪টার দিকে কাউন্সিলর সোহেল সুজানগরে তার কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মুখোশ পরা ১৫ থেকে ২০ জন তাকে গুলি করে। এতে কাউন্সিলর সোহেল লুটিয়ে পড়েন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন হরিপদ সাহা, পাথুরীয়াপাড়ার মো. রিজু ও মো. জুয়েল এবং সুজানগর এলাকার সোহেল চৌধুরী ও মাজেদুল।
স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করতে করতে চলে যায়।
১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া জানান, নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাউন্সিলর সোহেল তার কার্যালয়ে বসে ছিলেন। মোটরসাইকেলে এসে কয়েকজন সন্ত্রাসী অতর্কিত গুলি চালায়।
হামলায় আহত জুয়েল বলেন, ‘আওয়াজ শুনে রাস্তায় বের হয়ে দেখি, সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছে। এ সময় আমার পায়ে গুলি লাগে। তারপর কী হয়েছে বলতে পারছি না।’
কাউন্সিলর সোহেলের ভাগনে মোহাম্মদ হানিফ জানান, ‘সবাই আসরের নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ কানে আসে। গিয়ে দেখি মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি নিজে মামাকে কাঁধে করে বের করি।’
হামলাকারীরা নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।