চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ ও তার গাড়ির চালককে মারধরের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর সোমবার দুপুরে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরিনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি মার্টিন হীরক চৌধুরী।
তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান, জেলা বিএমএর কয়েকজন প্রতিনিধি, জেলার চার উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে এ দিন দুপুরে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে তদন্ত কমিটি করা হয়।
তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জেলা প্রশাসন থেকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মার্টিন হীরক চৌধুরী বলেন, ‘দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে গেল বৃহস্পতিবার অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তরা হলেন মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন ও সহকারী উপপরিদর্শক মখলেছুর রহমান।
হাদি জিয়া উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সিগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রচুর ভিড় হওয়ায় বিষয়টি তাকে জানান সেখানে থাকা চিকিৎসক। কিছুক্ষণ পর ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ভিড় উপেক্ষা করে তিনি কেন্দ্রের ভেতরে যান। এ সময় তার গাড়ির চালক নূর আলম টিকা কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে সেখানে ওই দুই পুলিশ তাকে বাধা দেন। ঘটনাটি তার সামনে হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দেয়ার পরেও তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তারা।
এর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় ওই উপজেলার অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিকাদান। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে রোববার দুপুরে জরুরি বৈঠক করেন জেলার তিন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বিএমএ চুয়াডাঙ্গার সভাপতিসহ ১৭ জন চিকিৎসক।
অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলেই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ ক্যাম্প থেকে আলমডাঙ্গা থানায় বদলি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’