বছরখানেক আগে বিয়ে হয় পাবনার সাঁথিয়ার মারিয়া খাতুন ও রাকিব ব্যাপারীর। প্রেমের সম্পর্ক থাকায় পরিবার থেকেই বিয়ে দেয়া হয়। এরপর তাদের মধ্যে কলহ লেগে থাকত নানা বিষয়ে।
কলহের জেরেই কীটনাশক পান করেন মারিয়া। হাসপাতালে নেয়ার পর সুস্থও হন। বাড়ি নেয়ার হলে দুইদিন পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। স্ত্রীকে দাফন করে বাড়ি ফিরেই অতিরিক্ত ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন রাকিব।
এই কথাগুলো বলছিলেন রাকিব ও মারিয়ার স্বজনরা। আর ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, রোববার ভোরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রাকিবের মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার মৃত্যু হয় তার স্ত্রী মারিয়ার। সোমবার থানায় অপমৃত্যুর মামলা হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
ওসি ও মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ বছরের মারিয়ার বাড়ি সাঁথিয়ার মানমদপুর গ্রামে ও ২৫ বছরের রাকিবের বাড়ি কল্যাণপুর গ্রামে।
স্বজনদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, ফেসবুক ব্যবহারকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মারিয়া কীটনাশক পান করেন। স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সেখানে চিকিৎসা শেষে শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন মারিয়া। তবে শনিবার সকালে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আরও জানান, শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর দাফন শেষ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজনরা তাকে জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, তিনি মাছ মারার ওষুধ খেয়েছেন। সেখানে রোববার ভোরে মারা যান রাকিব।
মারিয়ার বাবা মানিক হোসেন বলেন, ‘পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়ার পর থেকেই দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। মেয়েকে মাঝেমধ্যে নির্যাতন করত জামাই। রাগ করে আমার বাড়িতে চলে আসত মেয়ে। পরে আবার বুঝিয়ে জামাই বাড়িতে রেখে আসতাম। দুজনই যেহেতু মারা গেছে সেই ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দাবি নেই। তবে বাবা হিসেবে আমি এখন নিঃস্ব।’
ওসি আসিফ জানান, রাকিবের মরদেহ সুরতহাল শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুই পরিবারই থানায় অভিযোগ করেছে। সেটার ভিত্তিতে বিকেলে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন মারিয়ার চাচা আনিছুর রহমান।