বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যাংক খাতে উল্টো চিত্র, সূচকে বড় পতন

  •    
  • ২২ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৫৭

রোববার ব্যাংক খাতে ছিল ঝলমলে চিত্র। পাঁচটি ছাড়া সব কটি কোম্পানির দর বাড়ে, দর বৃদ্ধির হারও ছিল বেশ ভালো। তবে পরদিন একেবারেই উল্টোচিত্র। এদিন ওয়ান ও এসআইবিএল ছাড়া সব কটি ব্যাংকের শেয়ার দর হারায়। ছয়টি ব্যাংকের শেয়ার দর হারায় ৫ শতাংশের বেশি।

এক সপ্তাহ ধরে ব্যাংক খাতে টানা উত্থানের মধ্যে এবার দল বেঁধে সব শেয়ারের দরপতন ঘটল পুঁজিবাজারে। এ কারণে সূচকেও বড় পতন হলো। তবে লেনদেনে আবার সবাইকে ছাড়িয়ে এই খাত। লেনদেনের প্রায় অর্ধেক হলো একটি খাতেই।

গত বছরের মাঝামাঝি থেকে পুঁজিবাজারে উত্থানের মধ্যেও সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতে সেভাবে উত্থান দেখা যায়নি। তবে গত মঙ্গলবার থেকে বাজারের আচরণ এই খাতের বিনিয়োগকারীদের আনন্দিত করে।

সেদিন থেকে সূচক বাড়ুক আর কমুক, একদিন বাদে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে। মাঝে যে এক দিন বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমে, সেদিন পতনের হার খুব একটা বেশি ছিল না।

এর মধ্য রোববার নতুন সপ্তাহে সূচক কমার মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও ব্যাংক খাতে ছিল ঝলমলে চিত্র। পাঁচটি ছাড়া সব কটি কোম্পানির দর বাড়ে, দর বৃদ্ধির হারও ছিল বেশ ভালো।

তবে দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার একেবারেই উল্টোচিত্র। এদিন ওয়ান ও এসআইবিএল ছাড়া সব কটি ব্যাংকের শেয়ার দর হারায়। ছয়টি ব্যাংকের শেয়ার দর হারায় ৫ শতাংশের বেশি।

ডিএসইতে লেনদেনের চিত্র।

সূচক কমে ৬৩ পয়েন্ট, সেই সঙ্গে কমে যায় লেনদেন। আগের দিন পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি টাকার শেয়ার হাতবদল হলেও সেটি কমে এক হাজার দুইশ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে।

অবশ্য এর পেছনে একগাদা শেয়ারের লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটও কারণ। বড় মূলধনি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, স্কয়ার টেক্সটাইলসহ অনেকগুলো কোম্পানির লেনদেন ছিল স্থগিত।

আরও এক ঝাঁক কোম্পানি লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটকে সামনে রেখে লেনদেন হচ্ছে স্পট মার্কেটে। নগদ টাকা ছাড়া সেগুলোর শেয়ার কেনা যায় না।

ব্যাংকে দরপতনের দিনে আর্থিক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, প্রকৌশল, সিমেন্ট, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতেও দেখা গেছে ঢালাও দরপতন। ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বস্ত্র, বিমা খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।

সকালে বিমা খাতে প্রায় সব কটি কোম্পানির দর বাড়লেও বেলা শেষে অনেকগুলোর দর কমে যায়।

মোট লেনদেনের ৪৪ শতাংশ হয়েছে ব্যাংক খাতে। আগের দিন পৌনে আটশ কোটি টাকা হাতবদল হলেও সেটি কমে পাঁচশ কোটি টাকার কিছুটা বেশি হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকার কিছু বেশি হয়েছে।

সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি, যেটি আগের দিন সূচক সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছিল।

সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা ১০টি কোম্পানির ৫টিই ছিল ব্যাংক খাতে। এগুলো হলো: ডাচ্-বাংলা, এনআরবিসি, আইএফআইসি, ইসলামী ও প্রাইম ব্যাংক।

অন্য চার কোম্পানি হলো: লাফার্জ হোলসিম, আইসিবি, কোহিনূর কেমিক্যালস এবং ওয়ালটন।

বিপরীতে সূচকে কিছু পয়েন্ট যোগ করেছে রবি, ওয়ান ব্যাংক, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, এসআইবিএল, সামিট পাওয়ার, বার্জার পেইন্টস, আমান ফিড, অলিম্পিক, বিকন ফার্মা ও এসিআই লিমিটেড।

লেনদেনে শীর্ষে দশ কোম্পানি

বছর জুড়ে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনের শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন বন্ধ ছিল লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে। কেবল এই কোম্পানি নয়, নিয়মিত লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকে, এমন অনেক কোম্পানিই হয় রেকর্ড ডেট, নয় রেকর্ড ডেটের কারণে স্পটে ছিল। এ কারণে লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় এমন সব কোম্পানিকে দেখা গেছে, যা সচরাচর দেখা যায় না।

লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় এদিন এগিয়ে ছিল ব্যাংকের শেয়ার। এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল ওয়ান ব্যাংক। ব্যাংকটির এদিন মেটি ১৪২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে মোট ৮ কোটি ২৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩৩২টি শেয়ার।

কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। ১৬ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭ টাকা ২০ পয়সা।

লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৯০ পয়সা। লেনদেন হয়েছে মোট ৬৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজার ৯০১টি শেয়ার।

দর পতনের থাকা এনআরবিসি ব্যাংক ছিল লেনদেনের তৃতীয় স্থানে। এদিন ব্যাংকটির মোট ৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯২ হাজার ৩০২টি শেয়ার। ৩৫ টাকা ৬০ পয়সা মূল্যের শেয়ার এদিন কমে হয়েছে ৩২ টাকা ৮০ পয়সা।

দরপতনেও লেনদেনের শীর্ষে ব্যাংকখাত

ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের মোট লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৬টি শেয়ার। শীর্ষ লেনদেনের ১০ কোম্পানির মধ্যে চতুর্থ স্থানে থাকা ব্যাংকটির শেয়ার দর ১৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা।

চারটি কোম্পানির ভিন্ন খাতের হলেও নবম ও দশম কোম্পানি দুটিও ছিল ব্যাংক খাতের। এরমধ্যে প্রিমিয়ার ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৯১ হাজার ১২২টি শেয়ার।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ১৬২টি শেয়ার।

ব্যাংক খাতের বাইরে থাকা ফরচুন সুজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ওরিয়ান ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ২৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৮৫টি শেয়ার।

ডেল্টালাইফের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১৪ লাখ ৯ হাজার ৭১৫টি শেয়ার।

দর বৃদ্ধিতে সেরা ১০

রোববার দর বৃদ্ধিতে ব্যাংক খাতের আধিক্য থাকলেও সোমবার ছিল ভিন্ন চিত্র। ব্যাংকের কোম্পানির স্থান দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। এদিন দর বৃদ্ধিতে সদ্য তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানি ছাড়া বস্ত্র খাতের কাট্টালি টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৪৮ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে মোট ২২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৬৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭টি শেয়ার।

আমান ফিডের দর বেড়েছে ৮.১০ শতাংশ। কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ২০ লাখ ৯৫ হাজার ২২০টি শেয়ার।

ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮৩ শতাংশ। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৭৪ শতাংশ। এদিন এই দুটি কোম্পানি ছিল লেনদেন শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকাতেও।

স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৫.৫৫ শতাংশ। হাতবদল হওয়া ৭২ লাখ ১৪ হাজার ৪১টি শেয়ারের মূল্য ছিল ১২ কোটি ২ লাখ টাকা। ফু ওয়াং ফুডের শেয়ার দর বেড়েছে ৫.২২ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ১৫৩টি শেয়ার।

আলিফ ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৬৯ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৭৮ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫৩ টি শেয়ার।

এদিন তিন শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে মাত্র চারটি কোম্পানির। আর দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ১১টি কোম্পানির। এক শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ৩৩টি কোম্পানির। আর এক শতাংশের কম শেয়ার দর বেড়েছে ৪৯টি কোম্পানির।

দরপতনের শীর্ষ ১০

২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করা রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার দরে সোমবার কোনো প্রান্তসীমা ছিল না। ফলে এদিন কোম্পানির শেয়ার দর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বাড়ার পাশাপাশি কমার সুযোগ ছিল। একইভাবে লভ্যাংশ ঘোষণার পর রেকর্ড ডেট পরবর্তী প্রথম লেনদেনেও একইভাবে প্রান্তসীমা ছিল না।

কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১২.৭২ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে মোট ১ কোটি ৪ লাখ টাকা।

দরপতনেও শীর্ষ লেনদেনে রয়েছে ব্যাংকগুলো।

আরামটি সিমেন্টের ৯.৭৩ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে। লেনদেন হয়েছে ৬৫ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭০৫টি শেয়ার।

বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৯.০৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা। লেনদেন হয়েছে ২ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩০ হাজার ৮০২টি শেয়ার।

আমরা টেকনোলজির শেয়ার দর কমেছে ৮.৭৬ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৬১০টি শেয়ার। লেনদেন হয়েছে ৯৯ লাখ ২২ হাজার টাকার।

স্ট্যাইল ক্রাফটের ২ লাখ ২৭ হাজার ২১৮টি শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। শেয়ার দর কমেছে ৭.৯৩ শতাংশ।

ব্যাংক খাতের এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৭.৮৬ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯২ হাজার ৩০২টি শেয়ার। লেনদেন হয়েছে ৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর