বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার চক্রান্ত হিসেবেই তাকে মুক্তি দিচ্ছে না সরকার। তার মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে তার অনুসারীরা জীবন ও রক্ত দিতে প্রস্তুত বলে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার দাবিতে দলটির পূর্ব ঘোষিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের একটি কথা, আমাদের প্রিয় নেত্রী, আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তার মুক্তি হলে তাকে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাব। তার চিকিৎসায় বাধা সরকারের অনৈতিকতা।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসায় বাধা দিয়ে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার চক্রান্ত করেছে। এই চক্রান্ত রুখার জন্য দেশবাসীও জেগে উঠেছে। সুশৃংখলভাবে-ধর্য্যের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি সফল করার মধ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জন করব। আমরা আমাদের নেত্রীকে মুক্তি করব এবং তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা পারব।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘‘আইনের যারা ব্যাখ্যা দেয় তারা বেআইনিভাবে ক্ষমতায় আছে। দেশের সংবিধান মতে এই সরকারের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন-চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার মতো কোন সুযোগ নাই। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, জনগণ বলে, ‘আপনাদের নাকি সরকারে থাকার সুযোগ নাই।’ কারণ আপনারা বেআইনি, আপনার নির্বাচনে আসেন নাই, জনগণের ভোটে আসেন নাই।’’
বিএনপি এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছেন। তাই আপনাদের মুখে আইনের ভাষা বেমানান। বেআইনি ক্ষমতায় আছেন। সুতরাং আমরা বলব ন্যায়ের পথে চলেন, আইনের পথে চলেন।’
সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জন্য যেকোনো দায়িত্ব নিতে আমরা রাজি আছি। আমাদের সেই ক্ষমতা আছে। আমরা এর আগে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি। আমরাই পারবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘আগামী দিনের যে কর্মসূচি আসবে, সে কর্মসূচিতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করব।’
সকাল ১০টা নাগাদ শুরু হওয়া সমাবেশ চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত। এরপর নতুন কর্মসূচি হিসেবে খালেদার মুক্তির দাবিতে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার কথা জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। অন্যদের মধ্যে সমাবেশে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগরী শাখার সদস্য রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।