বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ পর্যালোচনায় মন্ত্রণালয়

  •    
  • ২২ নভেম্বর, ২০২১ ১২:২৭

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ থাকবে কি না, তার আইনগত দিক পর্যালোচনা করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দুই-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারে।’

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার জেরে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ হারানো জাহাঙ্গীর আলমের মেয়র পদ থাকবে কি না, তার আইনগত দিক পর্যালোচনা করে দেখছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

সচিবালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তাজুল বলেন, ‘গাজীপুরের মেয়রের বিষয়ে আমি আগেও বলেছি আইনটা দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনটা আমাদের ডিপার্টমেন্ট পর্যালোচনা করছে। পর্যালোচনা হোক, তারপর বলব। এটা শেষ হতে দুই-এক দিন লাগতে পারে।

‘পর্যালোচনা হচ্ছে, আইনগত বিষয়ে তার অবস্থানটা কী রকম হবে, সেটা দেখার চেষ্টা করছি। পদ থাকবে কি না, পর্যালোচনা করে পাওয়া যাবে; আইনে যেসব সুযোগ-সুবিধা আছে সেগুলো।’

দল বহিষ্কার করলে মেয়র পদ যাবে, এমন বিষয় স্থানীয় সরকার আইনে বলা নেই। জাতীয় সংসদেও দেখা গেছে দল থেকে বহিষ্কার করার পরও একাধিক ব্যক্তি তার সংসদ সদস্য মেয়াদের পুরোটা পার করেছেন।

তবে স্থানীয় সরকার আইনে এমন কিছু বিধান আছে, যে কারণে জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। যদি ক্ষমতাসীন দল তার বিরুদ্ধে মামলা করে এবং সে মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়, যদি তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরের সমর্থন হারান এবং তারা যদি অনাস্থা আনেন, তাহলে জাহাঙ্গীরের মেয়র থাকা অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

আইন করার মধ্য দিয়ে দেশে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয় ২০১৬ সালে। সিদ্ধান্ত হয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রার্থী দিতে পারবে দলীয় প্রতীকে। সে বিধান অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। এরপর একে একে দেশের সব সিটি করপোরেশনে দলীয় প্রতীকে ভোট হয়।

২০১৮ সালের ২৭ জুনের ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় সরকার আইনে বলা আছে, ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করলে সরকার, লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র বা কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করতে পারবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন, সেটি যদি নেয়া হয় এবং যদি তদন্তে প্রমাণ মেলে এবং যদি মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়, তাহলেই পদ হারানোর প্রসঙ্গটি আসে।

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার নিউজবাংলার কথা হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে। দল বহিষ্কার করায় জাহাঙ্গীরের মেয়র পদে থাকা নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইনে এ বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ব্যাখ্যা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এটা তো আমাদের জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা। আইনের মধ্যে কিন্তু সুষ্পষ্ট কিছু লেখা নাই। আইনের মধ্যে শুধু লেখা আছে, সে ফৌজদারি মামলা, দুর্নীতি বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করলে পদ হারাবে।’

যেসব কারণে মেয়রকে অপসারণ করা যায়

# স্থানীয় সরকার আইনে বলা আছে, মেয়র অথবা কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হবে যদি তিনি যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পরপর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন।

# যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হন।

# যদি তিনি দায়িত্ব পালনে অস্বীকার করেন বা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন।

# যদি তিনি অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন।

# বার্ষিক ১২টি মাসিক সভার বদলে ন্যূনতম ৯টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত করতে না পারেন বা সভায় উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হন।

# এই অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে তদন্ত করতে হবে এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।

মেয়রকে অপসারণ করা হলে আদেশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি অপসারণ আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখতে পারবেন।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন হয়েছে ২০০৯ সালে প্রণীত স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে। সেখানে করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরদের যোগ্যতা, অপসারণ বা পদচ্যুতির বিষয়ে নানা শর্তের কথা বলা আছে। তবে দল বহিষ্কার করলে পদ হারাবেন, এমন কোনো কথা বলা নেই।

আওয়ামী লীগ গাজীপুর মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদককে দল থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘরোয়া আলোচনায় তিনি বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের শহীদ হওয়ার প্রতিষ্ঠিত তথ্যের সত্যতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর