মালিকের দৈনিক টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া নিতে অস্বীকৃতি জানান ঠিকানা পরিবহনের হেলপার মেহেদী হাসান। কিন্তু ছাত্রীটি অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও তাকে হেনস্তা করেন তিনি।
গ্রেপ্তারের পর র্যাবের কাছে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন অভিযুক্ত চালক মো. রুবেল ও হেলপার মেহেদী হাসান। তাদের গ্রেপ্তারের পর রোববার সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকারোক্তির কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনের মত ওই কলেজ ছাত্রী শনির আখড়া থেকে কলেজে যাবার জন্য ঠিকানা পরিবহনের ওই বাসে চড়েন। হেলপার তার কাছে ২৫ টাকা ভাড়া দাবি করে। কিন্তু ছাত্রী হাফ ভাড়ার কথা বলে ১৫ টাকা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে হেলপার তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং বাস থেকে নেমে যাবার সময় ওই ছাত্রীর উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করে।’
পরে কলেজে গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অধ্যক্ষকে বিষয়টি বিস্তারিত জানান। এই ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রীরা প্রথমে কলেজের ভেতরে আন্দোলন করেন। পরে তারা বকশিবাজার সড়কে নেমে আসেন। এরপর তাদের সঙ্গে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেন। তারা চালক ও হেলপারের শাস্তি দাবি করেন।
বাসে শিক্ষার্থীর হাফ ভাড়া না নিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেয়া বাসচালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তারের পর র্যাবের ব্রিফিং। ছবি: নিউজবাংলা
ঘটনাটি জানার পর এবং কলেজ অধ্যক্ষের মৌখিক অভিযোগ পেয়ে চালক ও হেলপারকে আটকের জন্য অভিযান শুরু করে র্যাব।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, র্যাব গেয়েন্দারা ঘটনার সময় অনুযায়ী ঠিকানা পরিবহনের কোন বাসটি ওই রাস্তায় চলাচল করছিল সেই তথ্য ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাসটির চালক ও হেলপারকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আটকের পর ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দিয়ে তাদের শনাক্ত করা হয়।
আটকের পর চালক ও হেলপার হেনস্তার কথা স্বীকার করে জানান, মালিকের কাছ থেকে দৈনিক ৩ হাজার টাকা চুক্তিতে বাসটি চালানোর জন্য নিয়েছিলেন চালক রুবেল। তিন হাজার টাকার পর যা বাড়তি ইনকাম হতো, তা দুজন ভাগ করে নিতেন। হাফ ভাড়া নিলে তাদের আয় কম হবে ভেবেই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে তারা বিবাদে জড়ান।
এদিকে, হেনস্তার কথা স্বীকার করলেও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার কথা স্বীকার করেনি আটক চালক ও হেলপার। এমন কিছু ঘটে থাকলে তা পরবর্তী তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলেও জানান র্যাব কমান্ডার মঈন।